নওগাম পুলিশ স্টেশনে পরপর বিস্ফোরণের পর তীব্র জল্পনা চলছিল—এটা কি সন্ত্রাসবাদীদের নাশকতা, নাকি কোনও ভুলচুকের ফল (Police Station Blast)? অবশেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই জানাল, এই বিস্ফোরণ কোনও নাশকতা নয়। দুর্ঘটনাবশতই বিস্ফোরণ ঘটেছে থানার ভেতরে। শনিবার জম্মু–কাশ্মীর ডিভিশনের যুগ্ম কমিশনার প্রশান্ত লোখান্ডে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়ার সময়ই দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিস্ফোরণ ঘটে (Police Station Blast)।
শুক্রবার রাতের ঘটনা। নওগাম থানার একটি বড় অংশ মুহূর্তের মধ্যে উড়ে যায় বিস্ফোরণে (Police Station Blast)। শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯—এর মধ্যে রয়েছেন স্টেট ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির আধিকারিক, তিনজন এফএসএল বিশেষজ্ঞ, দু’জন ফোটোগ্রাফার, দু’জন রেভেনিউ অফিসার এবং একজন টেইলার। আহত হয়েছেন ২৭ জন পুলিশ কর্মী এবং তিনজন স্থানীয় মানুষ। বিস্ফোরণের ধাক্কায় থানার ভেতরের দোতলা গঠন একেবারে ধ্বংস হয়ে যায় (Police Station Blast)।
এই বিস্ফোরণের পর সন্দেহের তির প্রথম থেকেই ঘুরছিল নাশকতার দিকেই (Police Station Blast)। কারণ, এই বিস্ফোরণ হয়েছিল সেই একই বিস্ফোরক থেকে, যা দিল্লির বিস্ফোরণকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী জইশ-ই-মহম্মদের ছায়া সংগঠন প্যাফ এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকারও করে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাংবাদিক বৈঠকে এই নাশকতার দাবি নিয়ে একটিও শব্দ উচ্চারণ করা হয়নি।
জম্মু–কাশ্মীর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল নলীন প্রভাতের বক্তব্যও একই। তিনি জানান, থানার ভেতরে সুরক্ষিত জায়গায় রাখা ছিল বিস্ফোরকগুলি। নিয়ম মতো ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ হচ্ছিল। সেই সময়ই দুর্ঘটনাবশত বিস্ফোরণ ঘটে। তিনি বলেন, “যাবতীয় সতর্কতা নিয়েও রাত ১১টা ২০ মিনিটে এই বিস্ফোরণ হয়। এর মধ্যে অন্য কোনও সন্দেহ করার প্রয়োজন নেই। তদন্তে যা পাওয়া যাবে, সবই প্রকাশ্যে আনা হবে।”
ফরিদাবাদে মুজাম্মিল শাকিল নামে এক চিকিৎসকের ভাড়া নেওয়া বাড়ি থেকে ৯ নভেম্বর উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৩৬০ কেজি বিস্ফোরক। সেই বিস্ফোরকই তদন্তের কারণে আনা হয়েছিল নওগামে—কারণ সন্ত্রাস মামলার প্রথম এফআইআর দায়ের করে ছিল জম্মু–কাশ্মীর পুলিশ। আর সেই বিস্ফোরকই শেষ পর্যন্ত প্রাণ কেড়ে নিল তদন্তকারীদেরই।
নওগাম থানার রাতের সেই বিস্ফোরণ এখনও কাশ্মীরের মানুষের মনে ভয় ধরিয়ে রেখেছে। তদন্ত এগোচ্ছে, কিন্তু বড় প্রশ্ন—‘সব সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও এত বড় দুর্ঘটনা সম্ভব কীভাবে?’













