অবশেষে ৪৩ দিন পর আমেরিকার দীর্ঘতম ‘শাটডাউন’-এর অবসান (US Shutdown)। বুধবার রাতে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসে পাশ হয় বহুল আলোচিত তহবিল বিল (US Shutdown)। এরপরই সেটি পাঠানো হয় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, ট্রাম্প বিলটিতে সই করার সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় যুক্তরাষ্ট্রের এই অভূতপূর্ব প্রশাসনিক অচলাবস্থা।
প্রায় দেড় মাস ধরে কার্যত থমকে ছিল আমেরিকার সরকারি যন্ত্র (US Shutdown)। প্রশাসনের অগণিত দপ্তরে কাজ বন্ধ, লাখ লাখ সরকারি কর্মচারী বেতন ছাড়াই দিন কাটিয়েছেন। হিসেব বলছে—এই শাটডাউনের জেরে আমেরিকার মোট আর্থিক ক্ষতি ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি টাকা।
এই তহবিল প্যাকেজ নিয়ে কংগ্রেসের দুই কক্ষের মধ্যে টানাপড়েন চলছিল ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে, যখন মার্কিন অর্থবর্ষ শেষ হয় (US Shutdown)। সাধারণ নিয়মে এই সময়েই সরকারি তহবিলের নবীকরণ করা হয়। কিন্তু নতুন অর্থবর্ষে সরকারি খরচের পরিমাণ ও বণ্টন নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সেনেটরদের মধ্যে তীব্র মতভেদ তৈরি হয়।
শেষ পর্যন্ত রিপাবলিকানরা প্রস্তাব দেন, অন্তত নভেম্বর পর্যন্ত একটি স্বল্পমেয়াদি তহবিল চালু রেখে সরকারি কাজ সচল রাখা হোক (US Shutdown)। কিন্তু ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন না মেলায় অর্থ বরাদ্দ বিল আটকে যায় এবং শুরু হয় শাটডাউন। মঙ্গলবার মার্কিন সেনেটে (Senate) বিলটি পাশ হয় ৬০–৪০ ভোটে। ডেমোক্র্যাট দলের আটজন সেনেটর এবার রিপাবলিকানদের প্রস্তাবে সমর্থন জানান।
বিল পাশের পরই তা পাঠানো হয় হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসে, যেখানে ভোটাভুটির মাধ্যমে সহজেই অনুমোদন মেলে (US Shutdown)। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষরের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় ৪৩ দিনের শাটডাউন। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর আমেরিকায় শাটডাউন চলেছিল টানা ৩৫ দিন—যা সেই সময় পর্যন্ত ইতিহাসে দীর্ঘতম ছিল। এবার সেই রেকর্ডও ভেঙে দিল ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদের এই শাটডাউন।
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এই দীর্ঘ অচলাবস্থা শুধু সরকারি খাতে নয়, বেসরকারি সংস্থা, পর্যটন ও আর্থিক বিনিয়োগ ক্ষেত্রেও ধাক্কা দিয়েছে। তবে হোয়াইট হাউস আশাবাদী, “পরবর্তী অর্থবর্ষের বাজেটে জোরদার পুনরুদ্ধার ঘটবে।” এদিকে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের দাবি, “এই সংকট ট্রাম্পের একগুঁয়েমির ফল। দেশের কোটি সরকারি কর্মীর কষ্টের দায় প্রেসিডেন্টকেই নিতে হবে।” সব মিলিয়ে ৪৩ দিনের এই প্রশাসনিক অচলাবস্থা শেষ হলেও, রাজনৈতিক তরজা যে এখানেই শেষ নয়, তা বলাই বাহুল্য।













