দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণকাণ্ডে সামনে এল একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য (Delhi Blast)। তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই নতুন রহস্যের পর্দা খুলছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবারের এই বিস্ফোরণ আদৌ মূল পরিকল্পনা ছিল না। আসল টার্গেট ছিল আগামী ২৬ জানুয়ারি, প্রজাতন্ত্র দিবস। সেই দিন লালকেল্লা ও সংলগ্ন এলাকায় আরও বড় মাপের বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক কষেছিল জঙ্গি উমর, মুজাম্মিল ও শাহিন (Delhi Blast)।
এনআইএ সূত্রে খবর, মুজাম্মিল জেরায় স্বীকার করেছে এই ষড়যন্ত্রের কথা (Delhi Blast)। তার বয়ান অনুযায়ী, সে এবং উমর একাধিকবার লালকেল্লা চত্বরে রেইকি করে গিয়েছে। এমনকি দীপাবলির সময়েও জনবহুল এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু সেই পরিকল্পনা শেষ মুহূর্তে ব্যর্থ হয়। এরপরই তারা ফরিদাবাদে ভাড়া নেয় একটি বাড়ি, যেখানে মজুত রাখা হয়েছিল টন টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।
তদন্তকারীদের ধারণা, সোমবারের বিস্ফোরণ আসলে ছিল এক “ড্যামেজ কন্ট্রোল মুভ” (Delhi Blast)। কারণ, গোয়েন্দারা ফরিদাবাদের ওই বাড়ির হদিশ পেয়ে গিয়েছিলেন। ধরা পড়ার ভয়েই উমর হুড়োহুড়ি করে গাড়িভর্তি বিস্ফোরক সরানোর চেষ্টা করে। সেই সময়ই ঘটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা— লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের সামনে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে রাজধানী, মৃত্যু হয় ১১ জনের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে (Delhi Blast)। পাশাপাশি ২০ জনেরও বেশি সন্দেহভাজনকে জেরা করা হচ্ছে। উঠে এসেছে এক মৌলবির নামও। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, মেডিক্যাল পড়ুয়া যুবকদের ব্রেনওয়াশ করে এই নাশকতার পরিকল্পনায় নামায় সেই মৌলবি। উমর ও মুজাম্মিল দু’জনেই মেডিক্যালের ছাত্র ছিল। বর্তমানে তাদের জইশ-ই-মহম্মদের (Jaish-e-Mohammed) সঙ্গে যোগ প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দারা।
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ২৬ জানুয়ারির দিন লালকেল্লার সামনেই একটি গাড়ি ভর্তি বিস্ফোরক রেখে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। গাড়ি কোথায় রাখলে সর্বাধিক ক্ষতি হবে, তার জন্য একাধিকবার রেইকি করেছিল ধৃতরা। এমনকি, তাদের ফোনের টাওয়ার লোকেশন থেকেও মিলেছে সেই প্রমাণ।
গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। একাধিক বিদেশি দূতাবাস এবং আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংস্থা ২৬ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন— সেই মঞ্চে রক্তাক্ত বার্তা ছড়াতেই ছক কষেছিল জঙ্গি মডিউলটি।
এনআইএ-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ধৃতদের জেরায় যেভাবে পরিকল্পনার খুঁটিনাটি উঠে আসছে, তা দেখে মনে হচ্ছে এই হামলা শুধু দিল্লি নয়, গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বড় বার্তা পাঠানোর চেষ্টা।”
বর্তমানে এনআইএ এবং দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল একসঙ্গে এই তদন্তে নেমেছে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক ডিজিটাল প্রমাণ, বিস্ফোরক তৈরির ম্যানুয়াল এবং বিদেশি মুদ্রা। ফরিদাবাদ, নয়ডা, এবং গাজিয়াবাদে চলছে একযোগে তল্লাশি।
তদন্তকারীরা বলছেন, সোমবারের বিস্ফোরণ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি ছিল “প্রাথমিক ধাক্কা”— আসল টার্গেট ছিল প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দেশের মেরুদণ্ডে আঘাত হানা।













