দিল্লির বুক কাঁপিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ (Delhi Blast)। লালকেল্লার সামনে আগুনের দাউদাউ শিখা, ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্কের ছায়া রাজধানীজুড়ে। মৃত ও আহতদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। সোমবার রাতে এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Delhi Blast)। লিখলেন, “আজ দিল্লিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ঠিক সন্ধ্যা সাতটার কিছু আগে লালকেল্লা মেট্রোর এক নম্বর গেটের পার্কিং এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি হুন্ডাই আই১০ গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয় (Delhi Blast)। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের আরও কয়েকটি গাড়িতে। আগুনের লেলিহান শিখায় মুহূর্তে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় একাধিক গাড়ি। মেট্রোর গেটের কাছেই ছিল জৈন মন্দির ও উমাশঙ্কর মন্দির—সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে সেখানে ছিলেন বহু মানুষ। আচমকা বিস্ফোরণের পরেই গোটা এলাকায় সৃষ্টি হয় হুলস্থূল। আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে দৌড় দেন অনেকে (Delhi Blast)।
পুলিশ, দমকল ও অ্যাম্বুল্যান্সের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় মিনিটের মধ্যে (Delhi Blast)। উদ্ধার করা হয় দগ্ধদের। আহতদের ভর্তি করা হয়েছে দিল্লির লোকনায়ক হাসপাতালে। কীভাবে এই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটল তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে তদন্তকারীরা নাশকতার দিকটি একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এনআইএ ও এনএসজি ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে।
রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বিস্ফোরণের স্থল পরিদর্শন করেন তিনি। পরে তিনি বলেন, “কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীরা দ্রুত কাজ করছে।” পরে তিনি লোকনায়ক হাসপাতালে গিয়ে আহতদের অবস্থা খতিয়ে দেখেন।
এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে দু’জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। ফরিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে বিস্ফোরিত গাড়ির মালিক নাদিম খান। তার জেরায় নতুন তথ্য সামনে আসছে বলেই জানিয়েছে সূত্র। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়িটি হরিয়ানার নম্বরপ্লেট লাগানো ছিল বলে জানা গেছে।
ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই ফরিদাবাদেই উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজার কেজি বিস্ফোরক। তার পরেই রাজধানীতে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ— দুই ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। দেশজুড়ে প্রশ্ন উঠছে, অপারেশন সিঁদুরের পর মোদীর ‘জঙ্গি হামলা যুদ্ধের শামিল’ মন্তব্যের ঠিক পরেই রাজধানীতে এমন বিস্ফোরণ— তা কি কেবল কাকতালীয়?
পুরো শহর এখন নিরাপত্তার বলয়ে মোড়া। রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী। বন্ধ রাখা হয়েছে পার্কিং জোন। ঘটনাস্থলের প্রতিটি ভিডিও, সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল রেকর্ডিং খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজধানীর আকাশে এখন আতঙ্কের ছায়া— এবং দেশজুড়ে একটাই প্রশ্ন, এই বিস্ফোরণ কি দুর্ঘটনা, না কি নতুন সন্ত্রাসের বার্তা?











