দিল্লির রক্তাক্ত সন্ধ্যা। লালকেল্লার সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল রাজধানী (Delhi Blast)। সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের সামনে মুহূর্তে দাউদাউ আগুনে ঘিরে গেল এলাকা। চোখের সামনে আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে গাড়ি, ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তা— এমন দৃশ্য দেখে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পুলিশের অনুমান, বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি থেকেই ঘটেছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ ছুঁয়েছে (Delhi Blast)।
এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদমাধ্যমের সামনে বীভৎস সেই দৃশ্যের বিবরণ দিয়েছেন (Delhi Blast)। তাঁর কথায়, “আমি তখন লালকেল্লা মেট্রো ধরব বলে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ। মুহূর্তে সামনে দেখি আগুন। প্রথম গাড়িটায় আগুন ধরতেই মানুষ ছুটতে শুরু করে (Delhi Blast)। আমি নিজেই পুলিশের সঙ্গে মিলে গাড়ি কেটে চারজনের দেহ উদ্ধার করেছি।” তাঁর চোখেমুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।
তিনি আরও জানান, বিস্ফোরিত গাড়িটিতে লাগানো ছিল হরিয়ানার নাম্বার প্লেট— HR26 7674। তাঁর দাবি, “ওই গাড়ির ভিতরে চারজন ছিলেন (Delhi Blast), সবাই ট্যাক্সিচালকের পোশাক পরেছিলেন। রাস্তা থেকে আরও দুজনের দেহ আমি তুলেছি অ্যাম্বুল্যান্সে।” প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে স্পষ্ট— গাড়িটি ধীরে ধীরে যাচ্ছিল, তখনই সিগন্যাল লাল দেখে থেমে যায়, আর ঠিক সেই সময়েই বিস্ফোরণ ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঘটনাস্থল থেকে ১০-১২টি গাড়ি পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে (Delhi Blast)। উদ্ধার হয়েছে দেহাংশ ও বিস্ফোরকের টুকরো। এনআইএ ও এনএসজি ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে। ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে আশপাশের এলাকা। ফরেনসিক দল নমুনা সংগ্রহ করছে। আহতদের দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা কোনও সম্ভাবনাই খারিজ করছি না। নাশকতার ছক থাকতে পারে। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিচ্ছে।” এনআইএ ইতিমধ্যেই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ট্রেস করতে শুরু করেছে।
রাজধানী এখন তীব্র উদ্বেগে। হরিয়ানায় কয়েক ঘণ্টা আগে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক আর দিল্লির এই ঘটনার মধ্যে যোগ আছে কিনা, তা নিয়েই চলছে জোর তল্লাশি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, “সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এনআইএ, এনএসজি ও দিল্লি পুলিশ একযোগে তদন্ত করছে।”
ঘটনার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শাহের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। দিল্লি পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এদিকে শহরজুড়ে জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কয়েকটি ব্যস্ত রাস্তা ও মেট্রো প্রবেশদ্বার।
লালকেল্লার মতো সংবেদনশীল এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় দেশজুড়ে আলোড়ন— “যখন গাড়িটা ফেটে গেল, আমি ঠিক সামনে ছিলাম। মনে হচ্ছিল, আর বাঁচব না। শুধু আগুন আর ধোঁয়া। মানুষ ছুটছে, কেউ চিৎকার করছে, কেউ দেহ টেনে তুলছে। এমন দৃশ্য জীবনে দেখিনি।”
দিল্লি পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে অত্যাধুনিক বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। তদন্তের ফোকাস এখন গাড়ির মালিক ও চালকের ওপর। সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।
সারা দেশের নজর এখন লালকেল্লার সামনে ঘটে যাওয়া এই রক্তাক্ত ঘটনায়। সাধারণ মানুষের একটাই প্রশ্ন— এটা কি নিছক দুর্ঘটনা, নাকি জঙ্গি নাশকতার ভয়ঙ্কর বার্তা?












