সোমবার সন্ধ্যায় কেঁপে উঠল দিল্লি (Delhi Blast)। রেড ফোর্টের মেট্রো স্টেশনের সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ধোঁয়ায় ঢেকে গেল গোটা এলাকা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, মুহূর্তের মধ্যে চারপাশ অন্ধকার, আগুন, আর ছিন্নভিন্ন দেহাংশে ভরে যায় রাস্তা (Delhi Blast)। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০। আহত বহু, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনাস্থলে (Delhi Blast) পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি পুলিশ, এনএসজি, এনআইএ এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দল। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, দুটি গাড়িতে পরপর বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে আশপাশের দোকানগুলির কাচ ভেঙে যায়। আগুন লেগে যায় পাশের আরও গাড়িতে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, “চারদিকে শুধু আগুন আর চিৎকার। রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে কাটা হাত-পা, পুড়ে যাওয়া দেহ।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিস্ফোরণের (Delhi Blast) খবর পেয়েই জরুরি ভিত্তিতে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে। তিনি দিল্লি পুলিশ কমিশনার, গোয়েন্দা ব্যুরো প্রধান, এনএসজি ও এনআইএ প্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ঘটনাস্থলের প্রাথমিক রিপোর্টও তিনি হাতে পেয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিস্ফোরণের ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “নয়াদিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের খবর শুনে গভীরভাবে মর্মাহত। যাঁরা প্রিয়জন হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
এদিকে, গোয়েন্দা সূত্রে জানা যাচ্ছে, সোমবার সকালেই হরিয়ানার ফরিদাবাদে অভিযান চালিয়ে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এবং অস্ত্র উদ্ধার করেছিল। একইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন কাশ্মীরি চিকিৎসক ডঃ আদিল আহমেদ রাঠের। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ফরিদাবাদ ও দিল্লি সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চলছিল। ঠিক তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটল রাজধানীতে।
বিস্ফোরণের জায়গার কাছেই ছিল জৈন মন্দির ও উমাশঙ্কর মন্দির। ফলে তদন্তকারীরা নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। দিল্লি পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, “বিস্ফোরণের প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে এটা পরিকল্পিত হামলা হতে পারে। প্রতিটি কোণ পরীক্ষা করা হচ্ছে।”
ফরেনসিক দল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে রাসায়নিক নমুনা ও গাড়ির ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করেছে। এনআইএ-র একটি বিশেষ দল মঙ্গলবার সকালেই পুনরায় ঘটনাস্থলে পৌঁছবে বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনার পরই দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রেলস্টেশন, মেট্রো, বিমানবন্দর ও জনবহুল স্থানে নিরাপত্তা আরও কঠোর করা হয়েছে।
সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে ঘটে যাওয়া এই বিস্ফোরণ দিল্লি নয়, গোটা দেশকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে বিস্ফোরণের ভয়াবহ দৃশ্যের ভিডিও। দেশের নানা প্রান্ত থেকে শোকবার্তা ও ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন নেটিজেনরা।
দেশজুড়ে যখন নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তখন রাজধানীর বুকেই এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতার দিকেও ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।












