রাজগঞ্জের ‘দাবাং বিডিও’ প্রশান্ত বর্মন (Prashant Barman) ফের শিরোনামে। এক সময় কাজের দক্ষতা ও কড়া মনোভাবের জন্য জেলা প্রশাসনে ‘দাবাং’ তকমা পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন তিনি খবরের কেন্দ্রবিন্দু একেবারে অন্য কারণে। সোনা ব্যবসায়ী অপহরণ ও খুনের মামলায় নাম জড়িয়ে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছিলেন এই বিডিও। দিন কয়েক অফিসেও দেখা যায়নি তাঁকে। কিন্তু শুক্রবার যেন আগের মতোই দৃপ্ত ভঙ্গিতে সাংবাদিকদের সামনে এলেন প্রশান্ত (Prashant Barman)। মুখোমুখি হয়ে দিলেন এক বিস্ফোরক দাবি— “আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।”
প্রশান্ত বর্মনের (Prashant Barman) অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত চক্রান্ত চলছে। জলপাইগুড়িতে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার দাবাং ইমেজ নষ্ট করার জন্য আগে থেকেই ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, মিডিয়ার মাধ্যমে আমার ভাবমূর্তি ধ্বংস করা হবে। এখন সেই চেষ্টাই চলছে।”
বিডিওর (Prashant Barman) দাবি, তিনি কখনও কলকাতায় যাননি, কোনও বাড়ি বা ফ্ল্যাট তাঁর নামে নেই। সোনা ব্যবসায়ীর খুনের ঘটনাতেও তাঁর কোনও ভূমিকা নেই। বরং পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেন, “যারা সোনা চুরি করেছে, গলিয়েছে— তারাই এখন বড় গলায় কথা বলছে। ওদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে।”
তাঁর কথায়, “আমার কোনও সোনা চুরি যায়নি। আমায় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে।” গত কয়েকদিন অফিসে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠলেও প্রশান্তের দাবি, তিনি অফিসের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। “ভোটার কার্ড উদ্ধারের ঘটনায় আমি নিজে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। জয়েন্ট বিডিওকে রিপোর্ট দিতে বলেছি,” বলেন তিনি।
প্রশান্ত বর্মন আরও বলেন, রাজগঞ্জ ব্লকের উন্নয়নমূলক কাজ অন্য ব্লকগুলির তুলনায় অনেক এগিয়ে। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছেন, ঠিকাদার সিন্ডিকেট ভেঙেছেন, এই কারণেই নাকি তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধীরা সক্রিয় হয়েছে। তাঁর কথায়, “আমি আপস করি না। এই কারণেই অনেকের চোখে কাঁটা হয়ে উঠেছি।”
সূত্রের খবর, বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট ইতিমধ্যেই সোনা ব্যবসায়ী খুনের তদন্তে প্রশান্ত বর্মনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তিনি জানান, তদন্তে তিনি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।
প্রশান্ত বর্মনের এই মন্তব্যে জলপাইগুড়ির আমলা মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কেউ বলছেন, “নিজেকে বাঁচাতে নাটক।” আবার কেউ বলছেন, “যাঁরা দুর্নীতি ভাঙার সাহস দেখান, তাঁদের বিরুদ্ধেই এমন অপপ্রচার শুরু হয়।”
এখন দেখার, এই ‘দাবাং বিডিও’র দাবি সত্যি প্রমাণিত হয় কি না— নাকি তদন্তের জালে আরও জটিল হয়ে পড়বে রাজগঞ্জের সবচেয়ে আলোচিত প্রশাসনিক মুখ প্রশান্ত বর্মন।







