সীমান্তে চুপিসারে শক্তি প্রদর্শন (Indian Army)। শত্রুদের উদ্দেশে নিঃশব্দ কিন্তু মোক্ষম বার্তা দিল ভারত। উত্তরবঙ্গ ও তার লাগোয়া সীমান্তে তৈরি হল তিনটি নতুন সামরিক ঘাঁটি— একটিতে নয়, তিন রাজ্যে একযোগে। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, অসমের ধুবড়ি এবং বিহারের কিষানগঞ্জে গড়ে উঠেছে ভারতীয় সেনার তিনটি নতুন ব্যাটেলিয়ন ঘাঁটি বা ‘গ্যারিসন’ (Indian Army)।
ফোর্ট উইলিয়াম সূত্রের (Indian Army) খবর, প্রতিটি গ্যারিসনে থাকবেন ৮০০ থেকে ৯০০ জন জওয়ান। এটি ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটেলিয়ন হিসাবে কাজ করবে। মূল লক্ষ্য— “চিকেনস নেক করিডর”-এর চারপাশে ভারতীয় উপস্থিতি আরও দৃঢ় করা। এই করিডরটি ভারতের উত্তর-পূর্বকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রাখার একমাত্র পথ। সামরিক মহলের দাবি, চিন ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলি দীর্ঘদিন ধরে এই অংশটিকে কৌশলগতভাবে ‘টার্গেট’ করে রেখেছে। এবার সেই করিডরকে অপ্রবেশযোগ্য করে তুলতে শুরু করল ভারত।
সেনা (Indian Army) সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গ থেকে ধুবড়ির দূরত্ব প্রায় ২৪০ কিলোমিটার, চোপড়া থেকে মাত্র ৫২ কিলোমিটার এবং কিষানগঞ্জ থেকে ১৮০ কিলোমিটার— অর্থাৎ তিন জায়গাই কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিন রাজ্যেই নতুন সেনা ঘাঁটির অবস্থান এমন জায়গায়, যেখান থেকে বাংলাদেশ সীমান্তের নড়াচড়া নজরে রাখা সম্ভব।
চিনের সীমান্তে সামরিক বিস্তার এবং বাংলাদেশের ভিতরে আইএসআই–এর সক্রিয়তা— দুই দিক থেকেই এখন সজাগ ভারতীয় গোয়েন্দারা। সেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, “চিকেনস নেক করিডর ভারতের সবচেয়ে দুর্বল সামরিক অঞ্চলগুলির একটি। এই করিডরই উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। তাই এখানে ভারতকে অপ্রবেশযোগ্য করে তুলতে গ্যারিসন তৈরি করা হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ওই তিনটি ঘাঁটিতে মোতায়েন হয়েছে আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র, সাঁজোয়া যান ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। মোবাইল জ্যামিং সিস্টেম থেকে শুরু করে নতুন প্রজন্মের নজরদারি ড্রোন— সবই পৌঁছে গিয়েছে। সেনা সূত্রের মতে, এই তিনটি গ্যারিসনে ভারতের সর্বাধুনিক ট্যাঙ্কও থাকবে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের দাবি, এটি নিঃসন্দেহে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পদক্ষেপ। কারণ, এই অঞ্চল থেকেই একদিকে বাংলাদেশের উত্তরাংশে অনুপ্রবেশ, অন্যদিকে চিনা গোয়েন্দা কার্যকলাপের সম্ভাবনা থাকে। তাই ভারতীয় সেনা কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, “আমরা চাইছি উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা যেন আর কখনও কোনও বিদেশি শক্তির হাতে বিপন্ন না হয়। এই গ্যারিসনগুলোই সেই প্রতিরোধের প্রথম স্তম্ভ।”













