রাজ্য রাজনীতিতে ফের এক নতুন বিতর্কের জন্ম। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA)–এ আবেদনকারীরা কি বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন? এই প্রশ্নে এখন তোলপাড় রাজ্য। চলতি মাসেই কলকাতা হাইকোর্টে এই সংবেদনশীল বিষয়ে আবেদন জমা পড়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে (CAA)। সংস্থার দাবি, যাঁরা সিএএ-তে (CAA) আবেদন করেছেন এবং হাতে সরকারি রসিদ পেয়েছেন, তাঁদের সেই রসিদই যেন ভোটার তালিকায় নাম তোলার প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
সোমবার এই মামলার (CAA) শুনানি হতে পারে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের বেঞ্চে। আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে আদালতে সওয়াল করা হয়েছে, “হাজার হাজার মানুষ ইতিমধ্যেই ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য সিএএ-তে আবেদন করেছেন। কিন্তু তাঁদের রসিদ যদি ভোটার তালিকার ক্ষেত্রে স্বীকৃত না হয়, তবে তাঁরা নাগরিকত্ব থেকে কার্যত বঞ্চিত হবেন।”
উল্লেখ্য, গত ২৭ অক্টোবর জাতীয় নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে যে, দেশজুড়ে ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শুরু হচ্ছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া। পশ্চিমবঙ্গে সেই কাজ শুরু হয়েছে ৪ নভেম্বর থেকে। বুথ লেভেল অফিসাররা (BLO) বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দিচ্ছেন, যা চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ঠিক এই সময়েই বহু মানুষ নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় সিএএ-তে আবেদন করছেন।
তাই প্রশ্ন উঠছে— যদি নাগরিকত্ব প্রক্রিয়া চলমান থাকে, তবে সেই নাগরিকদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার সুযোগ দেওয়া উচিত কি না? এই নিয়েই আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে। আবেদনকারীদের দাবি, সিএএ আবেদনকারীদের বাদ দিলে তা হবে নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আদালতের কাছে তাই তাঁদের অনুরোধ— “সিএএ রসিদকে ভোটার তালিকার প্রমাণ হিসেবে স্বীকৃতি দিন।”
এর আগেও হাইকোর্টে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে মামলা হয়েছিল। আদালত তখন নির্দেশ দিয়েছিল, নির্বাচন কমিশনকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে। এবার সিএএ সংক্রান্ত এই নতুন মামলা রাজনৈতিক দিক থেকেও বড় বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। প্রশাসনিক মহলের একাংশ বলছে, বিষয়টি সংবেদনশীল— কারণ নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকার— দুই-ই সাংবিধানিক অধিকার, কিন্তু একটির আগে অন্যটি মেনে নেওয়া যায় কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।













