৫২ বছরের অপেক্ষার অবসান। স্বপ্নের বিশ্বকাপ এবার ভারতের হাতে। নবি মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে এক রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে ইতিহাস লিখল ভারতীয় মহিলা দল (Women’s World Cup 2025)। গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে আবেগে ভেসে গেলেন রোহিত শর্মা। চোখে জল, আকাশের দিকে তাকিয়ে নীরবে প্রার্থনা— সেই দৃশ্য ইতিমধ্যেই ভাইরাল (Women’s World Cup 2025)।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে শুরু থেকেই রানবন্যা বইয়ে দেয় স্মৃতি মন্ধানা ও শেফালি বর্মা (Women’s World Cup 2025)। মন্ধানা আউট হন ৪৫ রানে, কিন্তু শেফালির ব্যাটে আগুন। মাত্র ৭৮ বলে ৮৭ রানের দুরন্ত ইনিংস— ৭টি চার, ২টি ছয়। বিশ্বকাপ ফাইনালে সবচেয়ে কমবয়সে পঞ্চাশ ছোঁয়ার ইতিহাসও গড়লেন শেফালি (Women’s World Cup 2025)।
দলকে ঝড় তোলার মঞ্চ দিলেন দুই ওপেনার, কিন্তু মাঝের অর্ডার তাতে মানিয়ে উঠতে পারল না (Women’s World Cup 2025)। জেমিমা, হরমনপ্রীত, আমনজোত— কারও ব্যাটেই বড় রান নেই। তবে এক দিক আগলে লড়াই জারি রাখলেন দেপ্তি শর্মা। অপরাজিত অর্ধশতরান তাঁর। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেললেন রিচা ঘোষ। শেষ পর্যন্ত ২৯৮ রানে থামে ভারতের ইনিংস— মহিলা বিশ্বকাপ ফাইনালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর।
জয়ের জন্য ২৯৯ রানের লক্ষ্যে নামলেও শুরুটা ভাল করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু পাল্টা আঘাত শেফালির জাদুকরী স্পিনে। দুই টপ অর্ডার ব্যাটারকে ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরালেন তিনি (Women’s World Cup 2025)। এক প্রান্তে লরা ওলভাট লড়াই জারি রেখে দুরন্ত শতরান করেন, তবুও উইকেট পড়তে থাকে নিয়মিত। শেষ পর্যন্ত দেপ্তির বিধ্বংসী স্পেলে সব শেষ— ৩৯ রানে ৫ উইকেট! দক্ষিণ আফ্রিকা থেমে যায় ২৪৬ রানে।
ফাইনালের শেষ বল। দেপ্তির ডেলিভারিতে নেদিন ডি ক্লার্কের ক্যাচ ধরলেন হরমনপ্রীত। আর সেই সঙ্গে গর্জে উঠল নবি মুম্বই। লাফিয়ে উঠল ডাগআউট, দেশজুড়ে উচ্ছ্বাস— “চ্যাম্পিয়ন, ভারত চ্যাম্পিয়ন!” ক্যামেরা ঘুরতেই দেখা গেল রোহিত শর্মার চোখভরা জল। যে মাঠে তিনি বারবার দেশকে জিতিয়েছেন, সেখানেই এবার দেশের মেয়েদের ঐতিহাসিক মুহূর্ত দেখে আবেগে ভেসে গেলেন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘হিটম্যান’।
একদিকে শেফালির আগুনে ব্যাট, অন্যদিকে দেপ্তির ম্যাজিক স্পেল। আর তার সঙ্গে রিচার ঝোড়ো কামব্যাক, মন্ধানার সৌন্দর্য্যময় ড্রাইভ, হরমনপ্রীতের অদম্য নেতৃত্ব। এই জয় শুধু একটা ট্রফি নয়— এটা বিশ্বাসের জয়, লড়াইয়ের জয়, ভারতীয় মেয়েদের অদম্য স্বপ্নের সোনালি মুহূর্ত।
আজ ভারত জিতেছে। মেয়েরা জিতেছে। আর দেশের প্রতিটি ঘরে আজ একটাই সুর— “আমরাও পারি!”
ভারতের মেয়েদের যুগ শুরু হয়ে গেল। ইতিহাস এখন নীল-সোনার হাতে।













