ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন অধ্যায়। প্রথমবার মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ ভারতের ঝুলিতে। আর সেই স্বপ্নপূরণের নেপথ্যে এক বাঙালি— রিচা ঘোষ (Richa ghosh)। ঝুলন গোস্বামী যা শুরু করেছিলেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার মেয়েদের যে সাহস দেখাতে শিখিয়েছিলেন— সেই পথেরই শেষ ধাপ ছুঁয়ে দেখালেন শিলিগুড়ির মাত্র ২২ বছরের ক্রিকেটার। প্রথম বাঙালি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন রিচা। গলা ভিজিয়ে দিয়েছে গর্বের জল (Richa ghosh)।
ফাইনালের ৪৪ তম ওভার। তখনও টানটান উত্তেজনা। ঠিক সেই মুহূর্তে ব্যাট হাতে নামলেন রিচা ঘোষ (Richa ghosh)। সমর্থকদের বুক ধুকপুক। আর তাঁর ব্যাট থেকে ঝরে পড়ল আগুন— মাত্র ২৪ বলে ৩৪ রান। না থাকলে নাকি ভারত এই লক্ষ্যে পৌঁছতেই পারত না। ছক্কা, চার, ঠান্ডা মাথা আর ধোনি-শৈলীর শান্ত ফিনিশ— রিচা যেন লিখলেন নতুন মহাকাব্য। ম্যাচশেষে হাসিমুখে বললেন, “সবাই আমার উপরে বিশ্বাস রেখেছিল। বলছিল— তুই পারবি। সেই ভরসাই শক্তি দিয়েছে।”
ছ’বছর আগের স্মৃতি বলছে বাংলা মহিলা দলের সাবেক কোচ শিবশঙ্কর পাল— “শিলিগুড়ি থেকে এক মেয়ে এসেছে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই ছয় মারছে।” তখন কে জানত সেই কিশোরীই একদিন দেশকে এনে দেবে প্রথম মহিলা বিশ্বকাপ ট্রফি (Richa ghosh)।
শুরুটা মিডিয়াম পেস দিয়ে, পরে ঝোঁক উইকেটকিপিং— আর আদর্শ একজনই, মহেন্দ্র সিং ধোনি। হাতে মোবাইল, তাতে সারাক্ষণ ধোনির ম্যাচ ফিনিশিং ক্লিপ। শিখে নিলেন, চাপ? ভয়? মাঠে কেবল লক্ষ্য— জয়। ব্যাটিং অর্ডারেও তখনই বদল— দ্রুত রান তোলার ক্ষমতার জন্য তাঁকে মিডল অর্ডারে চেয়েছিলেন কোচ। আজ তাঁর নাম— ‘উইমেনস ক্রিকেটের ধোনি’ (Richa ghosh)।
দক্ষিণ মুম্বইয়ের রাত স্মরণ করিয়ে দিল আরেক রাত। ঠিক ১৪ বছর আগে ওয়াংখেড়ে মাঠে ধোনির ছক্কা এনে দিয়েছিল পুরুষদের বিশ্বকাপ। সেই শহরেই এবার ইতিহাস লিখল ধোনির ‘ছায়া’, বাংলার মেয়ে রিচা। মাঠে আগুন, গ্যালারিতে তুফান, দেশের চোখে জল— এবার সেই স্বপ্নপূরণ মেয়েদের হাতে।
পাটুলির অ্যাকাডেমিতে রোজ ঘষে-ঘষে নিজেকে তৈরি করা রিচা আজ কোটি কন্যার অনুপ্রেরণা (Richa ghosh)। রাতের পর রাত প্র্যাকটিস, থ্রোয়িং মেশিন, অতিরিক্ত আলো… সব মিলিয়ে তৈরি এই বিস্ফোরণ। প্রথমে মিড-উইকেট, পরে মাঠের প্রতিটি কোণে শট— রিচার ব্যাট আজ শুধু বল নয়, ছুড়ে দিয়েছে বার্তা— “মেয়েরা সব পারে।”
শিলিগুড়িতে আজ উৎসব। বাংলার গর্বের রাত। দেশের কন্যার বিশ্বজয়। আর আমরা বলি— ধন্য তুমি রিচা ঘোষ। ভারত তোমাকে স্যালুট জানায়।













