রাজ্যজুড়ে এখন সবচেয়ে বড় আলাপ—এসআইআর (SIR)। বিরোধীদের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়া চালু হলে বৈধ নথি না থাকলে সমস্যায় পড়বেন বহিরাগতরা। আবার রাজনৈতিক মহলেই শোনা যাচ্ছে, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ গেলেও সিএএ-র আওতায় নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে। এই দুই মতপার্থক্যের মাঝেই দেখা দিয়েছে প্রবল দুশ্চিন্তা (SIR)। আর সেই ভয় এবার ছড়িয়ে পড়েছে মেদিনীপুর শহরের এক অদ্ভুত নামের বস্তি এলাকায়— ‘হঠাৎ পল্লী’। নামের রহস্য যেন ভাগ্যেও লেখা আছে। মাঠে মাঠে তখনও চাষ হত, হঠাৎই সেখানে গজিয়ে উঠেছিল ঘরবাড়ি। তাই নাম হয়েছিল হঠাৎ পল্লী। আর এই জায়গাতেই এখন প্রায় ৯০টি বাড়ি, বাস প্রায় ১৫০ পরিবারে v।
স্থানীয়দের দাবি, তাঁদের অনেকেই ২০০২ সালের পরে এসেছেন v। কারও পরিবার দাঙ্গার মধ্যে বাংলাদেশ ছেড়ে এসেছে, কেউ সীমান্ত পার হয়ে এসেছে জীবনের নিরাপত্তার আশায়। কেউ কেউ বলেছেন, শুরুতে আশ্রয়, পরে কাজ, তারপর বহু বছরের বাস— এভাবেই ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে এই পল্লী। বহু ঘরে এখন ভোটার কার্ড, আধার, রেশন কার্ড— সবই আছে। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—এসব নথি কি যথেষ্ট (SIR)?
এসআইআর নিয়ে তাই তাঁদের উদ্বেগ তুঙ্গে। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, “আমরা বহু বছর ধরে এখানে আছি। ঘর করেছি, কাজ করছি, সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছি। ভারতেই থাকতে চাই। সরকার নিশ্চয়ই বুঝবে।” এক মহিলা বলেন, “২০০২-এর ভোটার তালিকায় নাম নেই, তাই চিন্তা হচ্ছে। সব কাগজ আছে তবু ভয় লাগছে।”
তৃণমূল কাউন্সিলর অনিমা সাহা স্থানীয়দের (SIR)বলছেন, ভয় না পেতে। তাঁর দাবি, একসময় জমি ফাঁকা ছিল, কম দামে থাকবার জন্য মানুষ বসতি গড়েছে। এখন প্রশাসনকে বলা হয়েছে যেন কেউ অযথা আতঙ্কে না থাকেন।
বিজেপির শহর মন্ডল ১-এর সাধারণ সম্পাদক গোকুল আচার্যর বক্তব্য, “এখানের বহু মানুষ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তাঁদের স্থানীয়ভাবে বোঝানো হয়েছে। প্রয়োজনে সিএএ ক্যাম্প হবে।”
এদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রশ্ন শুধু এক বস্তির নয়—রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের আরও বহু প্রান্তে এই বিতর্ক ছড়াতে পারে (SIR)। কিন্তু হঠাৎ পল্লীর সংকট অন্যরকম—এখানে ভয় শুধু তালিকার নয়, ভয় ঘর হারানোর। বহু বছর ধরে তৈরি করা জীবনের মাটি যেন হঠাৎ পিছলে না যায়—এই প্রার্থনাই এখানকার মানুষের।
সন্ধ্যা নামতেই পাড়ার আলো জ্বলে ওঠে। শিশুরা খেলতেও নামে। কিন্তু চোখেমুখে সেই আগের নিশ্চিন্ততা নেই। সবাই যেন আড়ালে একই প্রশ্ন করছে—
“হঠাৎ এসে বাঁচলাম, হঠাৎ কি আবার সব শেষ হয়ে যাবে?”













