বাংলার নানা প্রান্তে SIR আর NRC–র গুজব ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আগরপাড়া, ইলামবাজারের পর এবার বারাকপুর (Barackpore)। টিটাগড়–বারাকপুর এলাকায় গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক গৃহবধূ। পরিবারের দাবি, SIR এবং বাংলাদেশে ফিরে না যেতে পারার মানসিক চাপেই শেষ পথ বেছে নিলেন কাকলি সরকার ওরফে কাকলি সর্দার (Barackpore)।
বিয়ের পর প্রায় পনেরো বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এ দেশে (Barackpore) এসেছিলেন কাকলি। অভিযোগ, তাঁর পাসপোর্ট হয়নি, তাই অসুস্থ বাবাকে দেখতে বাংলাদেশ যেতে পারছিলেন না। দীর্ঘদিন ধরেই এই যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি (Barackpore)। পরিবারের কথায়, পাসপোর্ট ঝুলে থাকা, বাপেরবাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ না থাকা, তার উপর SIR–NRC–র আতঙ্ক… সব মিলিয়েই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন কাকলি।
শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ আচমকাই ছাদের দরজা বন্ধ করে গায়ে আগুন দেন তিনি (Barackpore)। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করা হলেও বাঁচানো যায়নি। ঘটনার পর শ্বশুর, স্বামী এবং ভাসুরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে টিটাগড় থানার পুলিশ।
শাশুড়ি শিবানি সরকার জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের বাবা খুব অসুস্থ ছিল। সেই নিয়ে খুব চিন্তা করত। NRC–র কথাও বলত মাঝেমধ্যে। বিয়ের পর আর দেশ যেতে পারেনি। মন খারাপ করত।” পরিবারে অভিযোগ, স্বামীকেও বারবার বলেছিলেন পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে, যাতে বাবাকে একবার দেখতে পারেন।
এই ঘটনার রেশ ছড়িয়েছে রাজ্য জুড়ে। কারণ, এর আগে ঠিক একই অভিযোগ উঠেছিল আগরপাড়ায় প্রদীপ করের মৃত্যুকাণ্ডে। সেখানে NRC আতঙ্কে আত্মহত্যার অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক ঝড় ওঠে। সেই ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নেমেছেন, সুইসাইড নোট তাঁর লেখা কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।
প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে এই ঘটনার সঙ্গে SIR–NRC আতঙ্কের যোগ মেলেনি। তবে বারাকপুরের এই মৃত্যুতে ফের প্রশ্ন — গুজব কি মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে? আতঙ্কের ছায়া কি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে? স্থানীয়দের একাংশের দাবি, “মানুষ ভয় পাচ্ছে। ভুল খবর ছড়ালে পুলিশ–প্রশাসন আরও সতর্ক হোক।”
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও, পুলিশের বক্তব্য— “তদন্ত চলছে, গুজবে কান দেবেন না।”













