বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন চাঞ্চল্য। নির্বাসনে প্রায় এক বছর। সেই অবস্থাতেই প্রথমবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। গত বছরের ছাত্র-যুব আন্দোলনে ব্যাপক রক্তপাতের ঘটনাকে ঘিরে তীব্র বিতর্ক যখন চরমে, তখনই প্রকাশ্যে ক্ষমা চান তিনি (Sheikh Hasina)। তবে সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দেন, আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীকে জনতার উপর গুলি চালানোর নির্দেশ তিনি দেননি। তাঁর কথায়, সেই অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’।
হাসিনা (Sheikh Hasina) জানান, জুলাইয়ে যে ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল তা তিনি দেখছেন ‘সহিংস বিদ্রোহ’ হিসেবে। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন নেতা হিসেবে সামগ্রিক দায় তিনি স্বীকার করেন ঠিকই, কিন্তু বিশেষ করে গুলি চালানোর নির্দেশ— সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আদালতে পেশ হওয়া অডিয়ো রেকর্ডিং নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি (Sheikh Hasina)। তাঁর দাবি, প্রসঙ্গহীনভাবে কথার টুকরো তুলে তা বিকৃত করে ছড়ানো হয়েছে।
হাসিনার (Sheikh Hasina)বক্তব্য, তখনকার আওয়ামী লিগ সরকারই প্রথমে স্বাধীন তদন্ত শুরু করেছিল। পরে অন্তর্বর্তী সরকার এসে তা থামিয়ে দেয়। আন্দোলনের সময় যে সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছিল, সেগুলির অনেকটাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ বলে জানান তিনি। দাবি করেন, নির্দেশিকার মধ্যেই বিশেষ পরিস্থিতিতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি ছিল। তবে স্বীকার করেন, “জটিল পরিস্থিতিতে কিছু সিদ্ধান্ত ভুলও হতে পারে।”
১৪০০ মানুষের মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে চলছে বিচার। চার্জশিটে নাম শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina)। অভিযোগ মানবতাবিরোধী অপরাধের, দাবি করা হয়েছে মৃত্যুদণ্ডেরও। কিন্তু হাসিনার যুক্তি, এই সংখ্যা অতিরঞ্জিত, প্রচারে কাজে লাগে বলেই এমন করা হয়েছে। তিনি দোষ চাপান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উপরে। বলেন, “এটি প্রহসনের বিচার। যারা ক্ষমতায় বসেছে তারা আমাকে সরাতে চায়, তাই এই মামলা।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া শেষ। হাজিরা দেননি হাসিনা। ১৩ নভেম্বর ঘোষণা হবে রায়। এই মুহূর্তে তাঁকে যে কঠোর শাস্তি— এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে— সেই জল্পনা তুঙ্গে। কিন্তু হাসিনা নির্বিকার। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, সহিংস বিদ্রোহের সময়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনও নেতাকে শাস্তির মুখোমুখি করা কখনও উচিত নয়।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের হাওয়া ইতিমধ্যেই বদলে দিয়েছে দেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপট। এখন দেখার পালা, মুজিব কন্যার ভাগ্যে কী লেখা আছে ট্রাইব্যুনালের চূড়ান্ত রায়ে।









