বাংলার রাজনীতি ফের তপ্ত। আগরপাড়ার প্রদীপ করের রহস্যমৃত্যু ঘিরে যেন নতুন ঝড়। পরিবার বলছে, NRC আতঙ্কেই শেষ হয়ে গেলেন প্রদীপ (NRC Death)। কিন্তু রাজনীতি এখন আগুনের ফুলকি— তৃণমূল বলছে, এই মৃত্যু BJP–র ‘ভয় দেখানোর রাজনীতির’ ফল, আর বিজেপির পাল্টা অভিযোগ— “মানসিক অবসাদ, NRC নয়। জোর করে রাজনীতি করা বন্ধ করুন।”
বুধবার দুপুরেই মৃতের বাড়িতে হাজির তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের (NRC Death) সঙ্গে কথা বলেই নির্বাচন কমিশন ও মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বেরিয়ে বলেন, “এই মৃত্যুর দায় কমিশন আর বিজেপির।” তাঁর দাবি, “জানবুজে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে। যারা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সময়।”
পালটা জবাব দিতে ছাড়েনি বিজেপি। পানিহাটির বিজেপি নেতা চণ্ডীচরণ রায়ের বক্তব্য, প্রদীপের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিলই। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী তাই ভোটার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ পড়ার প্রশ্নই নেই (NRC Death)। তাঁর দাবি, “তাহলে ভয় পেলেন কেন? তাঁকে কেউ প্ররোচিত করল না তো?” তিনি আরও বলেন, “পরিবারের বিষয় নিয়ে মানসিক অবসাদেই আত্মহত্যা করেছেন। তাই নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।” তাঁর দাবি, “চাইলে হাইকোর্ট মনিটরড তদন্ত হোক, বা সিবিআই হোক— সত্যি বেরিয়ে আসুক।”
বিরোধী দলনেতা শাসককে নিশানায় রেখে বলেন, “ওই বাড়ির লোক তৃণমূলের। যিনি মারা গেছেন তাঁর নিজেদের কেউ নেই। ২০০২ এর ভোটার। সব নাটক।”
এদিকে রহস্য আরও গাঢ় করেছে উদ্ধার হওয়া সেই চিরকুট। পুলিশের দাবি, সেখানে স্পষ্ট লেখা, “আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।” কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে উঠেছে প্রশ্ন। কারণ প্রদীপ করের ডান হাতের চারটে আঙুল ৮০–র দশকের আগে দুর্ঘটনায় কেটে গিয়েছিল। পরিবারের সদস্যের ভাষায়, “ডান হাতেই খেতেন, কাজও করতেন। কিন্তু লিখতে পারতেন কি না, জানি না।” স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন— তাহলে কে লিখল সেই নোট (NRC Death)?
ঘটনা যত এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে রাজনৈতিক পারদ। এখন রাজ্যবাসীর চোখ— সত্যিই কি NRC–র আতঙ্ক? নাকি অন্য কোনও গোপন রহস্য? সিবিআই তদন্ত কি সত্যিই নতুন মোড় এনে দেবে?
রাজনীতির দাবা বোর্ডে এক সাধারণ মানুষের মৃত্যু, আর তার উপরই দাঁড়িয়ে নতুন রাজনৈতিক উত্তাপ। আগরপাড়া আজ দেখছে, মৃত্যু কীভাবে ভোটের স্লোগান হয়ে উঠতে পারে।
এখন শুধু প্রশ্ন— প্রদীপ করের মৃত্যুর পিছনে ভয়, না ভয়ংকর রাজনীতি? সময়ই উত্তর দেবে।













