রাজ্যে এখনও শুরু হয়নি SIR প্রক্রিয়া। কিন্তু শুরু হওয়ার আগেই রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে। একদিকে রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “একজন বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলেও মোথাবাড়ি লণ্ডভণ্ড করে দেব।” মঙ্গলবার সেই একই ভাষায় সরব হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি— “যদি কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ যায়, তবে আমরা দিল্লিতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিস ঘেরাও করব।”
কিন্তু দলের ভেতরেই এই ইস্যুতে এবার শোনা গেল একেবারে বিপরীত সুর (Anubrata Mandal)। বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) বললেন, “SIR হোক না! অসুবিধা কী আছে? SIR হলে তো ভালই হবে, খারাপের কিছু নেই। এত ভাল একটা জিনিস, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”
একদিকে যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “সব সময় বিজেপি থাকবে না। তখন যেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে না যান,” তখনই কেষ্টর (Anubrata Mandal) এমন মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। অভিষেক এদিন আরও বলেন, “আমি সাংসদ হিসাবে ওয়ার্নিং দিচ্ছি— সরকার বদলাবে। তখন আপনারা জবাবদিহি করবেন। জ্ঞানেশবাবু দেশ ছেড়ে পালাবেন না। অমিত শাহ থাকবেন না, সংবিধান থাকবে। তখন যেখানে থাকবেন, খুঁড়ে এনে জবাব দিতে হবে।”
অন্যদিকে, অনুব্রতর শান্ত সুরে ‘SIR হোক’ মন্তব্যে তৃণমূলের ভেতরেই শুরু হয়েছে ফিসফাস। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যেখানে নির্বাচনী কমিশনের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছেন, সেখানে অনুব্রত মণ্ডলের এমন মন্তব্যে প্রশ্ন উঠেছে— এটা কি কেষ্টর ‘নিজস্ব মত’, নাকি দলের ভিতরে কোনও অঘোষিত মতবিভাজনের ইঙ্গিত?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিষেক ও অনুব্রতের (Anubrata Mandal) এই বিপরীত বার্তা শুধু তৃণমূলের অবস্থান নয়, দলের অভ্যন্তরীণ কৌশল নিয়েও নতুন প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে এমন সময়, যখন SIR নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিতর্ক বাড়ছে এবং তৃণমূল নেতৃত্ব বারবার ভোটার তালিকা থেকে ‘বৈধ নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা’ তুলে ধরছে।
বীরভূমের রাজনীতিতে অনুব্রত মণ্ডল বরাবরই স্পষ্টভাষী নেতা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এবার তাঁর ‘SIR হোক’ মন্তব্যে দলের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, কেষ্ট হয়তো বাস্তববাদী অবস্থান নিয়েছেন, আবার অনেকে বলছেন— তাঁর মন্তব্য তৃণমূলের মূল বার্তাকে দুর্বল করছে।
এদিকে অভিষেকের তীব্র হুঁশিয়ারি ও কেষ্টর শান্ত স্বর— দুইয়ের মাঝেই এখন তৃণমূলের ভেতরে চলছে তীব্র আলোচনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এটি কেবল ভোটার তালিকার প্রশ্ন নয়, বরং দলের ভিতরে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও এক নতুন বার্তা।











