অবশেষে খুলল উত্তরবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান (Jaldapara National Park)। দিন পনেরো বন্ধ থাকার পর সোমবার সকালে ফের পর্যটকদের জন্য খুলে গেল মাদারিহাটের এই বিখ্যাত জঙ্গলসাফারির দরজা। উদ্যান খুলতেই উপচে পড়ল পর্যটকদের ভিড়। কেউ এলেন হাতি সাফারির টিকিট নিতে, কেউ আবার জিপে চেপে ঢুকে পড়লেন ঘন জঙ্গলের মধ্যে। প্রথম দিন থেকেই যেন উৎসবের আমেজ জলদাপাড়ায় (Jaldapara National Park)।
প্রায় পনেরো দিন আগে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়েছিল উত্তরবঙ্গ। হলং নদীর (Jaldapara National Park) উপর কাঠের সেতু জলের তোড়ে ভেঙে পড়ায় ৫ অক্টোবর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেট। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় জঙ্গল সাফারি ও হাতি সাফারির সমস্ত বুকিং। চিলাপাতা, কোদালবস্তি ও শালকুমার পর্যটনকেন্দ্র খুলে গেলেও মাদারিহাটের জলদাপাড়া পর্যটকদের জন্য বন্ধই ছিল এতদিন (Jaldapara National Park)।
এই বন্ধের জেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন স্থানীয় গাইড ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। প্রায় ৩৮ জন গাইড ও জিপ চালকের রোজগার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল (Jaldapara National Park)। গাইড ইউনিয়নের সেক্রেটারি প্রবীর দাস বলেন, “আমাদের সংসার চলে পর্যটকদের জঙ্গল দেখিয়ে। এতদিন পার্ক বন্ধ থাকায় কারও ঘরে চুলা জ্বলছিল না। আজ জাতীয় উদ্যান খুলে যাওয়ায় মনে হচ্ছে নতুন করে জীবন ফিরে পেলাম।”
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর প্রশাসনের উদ্যোগে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে হলং নদীর উপর কাঠের সেতু (Jaldapara National Park)। সেই পথ দিয়েই সোমবার থেকে আবার জঙ্গলের ভেতরে প্রবেশ শুরু হয়েছে। জলদাপাড়ার এই নতুন সূচনায় খুশি শুধু রাজ্যের নয়, প্রতিবেশী রাজ্য অসম ও সিকিম থেকেও বহু পর্যটক।
স্থানীয় হোটেল ও রিসর্ট মালিকদের মুখেও স্বস্তির হাসি। তাঁদের কথায়, “দীপাবলির সময়টা পর্যটনের জন্য সোনার সময়। কিন্তু বন্যার পর উদ্যান বন্ধ থাকায় বুকিং বাতিল হচ্ছিল। আজ আবার সব আগের মতো হয়ে গেল।”
প্রথম দিনের সকাল থেকেই জাতীয় উদ্যানের প্রবেশদ্বারে লম্বা লাইন— কেউ হাতি সাফারির অপেক্ষায়, কেউ আবার ক্যামেরা হাতে বন্যপ্রাণীর ছবির খোঁজে। উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে জলদাপাড়ার পুনর্জাগরণে ফের প্রাণ ফিরে পেল পুরো পর্যটন এলাকা।