উত্তরবঙ্গে ফের রাজনৈতিক হিংসা (Darjeeling attack)। এবার আক্রান্ত দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। শনিবার বিকেলে সুখিয়াপোখরির কাছে তাঁর কনভয়ে (Darjeeling attack) হামলার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ত্রাণ কর্মসূচি শেষে সাংসদ যখন ফেরার পথে ছিলেন, ঠিক তখনই তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে একদল দুষ্কৃতী পাথর ছোড়ে। ঘটনাস্থলেই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। রাজুর কনভয়ের গাড়িগুলির কয়েকটিতে ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
রাজু বিস্তা (Darjeeling attack) জানিয়েছেন, “আমরা ত্রাণ দিতে এসেছিলাম, মানুষের পাশে দাঁড়াতে। কিন্তু যারা আমাদের ভয় পায়, তারাই এই হামলা চালিয়েছে। পাহাড়ে বিজেপি বিরোধীরাই এর সঙ্গে যুক্ত।” ঘটনার পর তিনি স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এই হামলার ঘটনায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সাংসদ। ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “তৃণমূলের নেতাদের মাঠে দেখা যায় না। উত্তরবঙ্গে তাঁদের সাংসদ বা বিধায়করা ত্রাণ দিতে আসেন না। কিন্তু বিজেপির নেতারা (Darjeeling attack) যখন মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন, তখনই ওদের অস্বস্তি হচ্ছে। তাই এই হামলা। আমরা ভয় পাই না। জনগণ সব দেখছে।”
রাজুর এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, দিন কয়েক আগেই উত্তরবঙ্গে হামলার শিকার হয়েছিলেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ও মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু। দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তাঁদের গাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। খগেন মুর্মু এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
একইভাবে আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওঁরাওকেও দু’দিন ধরে বিক্ষোভ ও হামলার মুখে পড়তে হয়। কখনও বিয়ারের বোতল উঁচিয়ে তাঁকে ভয় দেখানো হয়, কখনও ত্রাণ বিলি আটকানোর চেষ্টা করা হয়।
এই ধারাবাহিক আক্রমণের পর বিজেপির দাবি, উত্তরবঙ্গে বিজেপি নেতাদের টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, সব হামলার পিছনেই রয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।
অন্যদিকে প্রশাসন সূত্রে খবর, সুখিয়াপোখরির ঘটনায় দোষীদের শনাক্ত করতে পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে। পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই দুর্গত এলাকাতেই গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেন। তাঁর সফরের পরেই বিজেপির পক্ষ থেকে একই এলাকায় রাজু বিস্তার যাওয়া, এবং ফেরার পথে হামলা — এই যোগসূত্র নিয়েই এখন সরগরম রাজনীতি।
রাজু বিস্তার স্পষ্ট বার্তা, “এটা রাজনৈতিক হামলা। আমরা ভয় পাই না, বরং আরও শক্তভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াব।”
উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন প্রশ্ন একটাই— পরপর বিজেপি নেতাদের উপর হামলার পেছনে কে বা কারা? পাহাড়ে ভোটের আগে কি নতুন করে তৈরি হচ্ছে সংঘর্ষের মঞ্চ?