ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (Ukraine President) শনিবার জানিয়েছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ থামাতে তাঁর ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি (Ukraine President) এক্স (X)-এ লিখেছেন, “আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছি — কথোপকথনটি খুবই ইতিবাচক এবং ফলপ্রসূ ছিল। আমি তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছি গাজা যুদ্ধ থামানোর ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির জন্য। এটি একটি অসাধারণ অর্জন। যদি এক অঞ্চলে যুদ্ধ থামানো যায়, তবে নিশ্চয়ই অন্য অঞ্চলেও তা সম্ভব — ইউক্রেন যুদ্ধসহ।”
এই কথোপকথন এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই বছর ধরে চলা ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের অবসান ঘটেছে। গাজার যুদ্ধের ফলে এতদিনে ৬৭,০০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং সাম্প্রতিক চুক্তির মাধ্যমে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন হামাসের হাতে আটক শেষ কয়েকজন বন্দিও। এই শান্তিচুক্তি ঘোষণার পর ইসরাইল ও ফিলিস্তিন— দুই দেশেই আনন্দ ও স্বস্তির পরিবেশ দেখা দিয়েছে।
শান্তিচুক্তির পর এবার ট্রাম্পের দৃষ্টি ইউক্রেন (Ukraine President) যুদ্ধের দিকে। জানা গেছে, তিনি ইতিমধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং জেলেনস্কি— উভয়ের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছেন, যাতে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সমাধানে কোনও পথ খুঁজে পাওয়া যায়।
গত ফেব্রুয়ারিতেই জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের সম্পর্ক একসময় বেশ উত্তপ্ত অবস্থায় পৌঁছেছিল, যখন দু’জনের মধ্যে হোয়াইট হাউসে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বৈঠকে মুখোমুখি তর্ক হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে।
ট্রাম্প সম্প্রতি জেলেনস্কিকে “একজন ভালো মানুষ” বলে উল্লেখ করেছেন এবং প্রকাশ্যে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন। গত মাসে দু’জনের দেখা হয়েছিল জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সময়, নিউইয়র্কে।
তবে ট্রাম্পের কূটনৈতিক চেষ্টার মাঝেই তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতি ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। গত আগস্টে আলাস্কা সম্মেলনে দুই নেতা ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করলেও কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি। পরে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি পুতিনের কাছ থেকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ আশা করেছিলাম। তিনি আমাকে হতাশ করেছেন।”
অন্যদিকে, জেলেনস্কি ইউরোপীয় দেশগুলির পাশাপাশি ভারতসহ অন্যান্য দেশের কাছ থেকেও সমর্থন জোগাড় করার চেষ্টা করছেন। তাঁর লক্ষ্য — বিশ্বজনমতকে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করে যুদ্ধ থামাতে বাধ্য করা। বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক মহল এখন আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে — গাজায় যেমন ট্রাম্প শান্তি ফেরাতে পেরেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধেও কি তেমন অলৌকিক পরিবর্তন সম্ভব?