উত্তরাখণ্ড ( Uttarakhand) আবারও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সাক্ষী হলো। মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ভূমি ধসের জেরে চামোলি জেলায় একাধিক গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। উদ্ধারকাজ চলাকালীন ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এল এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য—এক মহিলা, বয়স ৩৮, এবং তাঁর দুই যমজ সন্তান ( Uttarakhand) । দশ বছরের বিশাল ও বিকাশকে বুকে জড়িয়ে ধরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। শেষ মুহূর্তে সন্তানদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
এর আগে, অলৌকিকভাবে ধ্বংসস্তূপ ( Uttarakhand) থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল মহিলার স্বামী কুয়াড় সিংকে। বিপর্যয়ের ১৬ ঘণ্টা পর তাঁকে উদ্ধার করা হয়, কিন্তু স্ত্রী ও সন্তানদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
উত্তরাখণ্ডের ( Uttarakhand) নন্দনগর এলাকায় বুধবারের প্রবল বৃষ্টির ফলে আকস্মিক বন্যা ও পাহাড় ধস নেমে আসে। এতে অন্তত আটজন নিখোঁজ হন। জেলা প্রশাসন দ্রুত এনডিআরএফ ও এসডিআরএফকে উদ্ধার কাজে নেয়। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। একাধিক বাড়ি, দোকান ধ্বংস হয়েছে এবং রুজি-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় দিনও উদ্ধার কাজ চলছিল। তার সুবিধার জন্য দেরাদুন-মসুরি হাইওয়ে-তে জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী ‘বেইলি ব্রিজ’ তৈরি করা হয়, যা যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।
মোটামুটি এক সপ্তাহ আগেও দেরাদুনের সহস্রধারায় ভয়াবহ মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ভূমি ধসে কমপক্ষে ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। রাস্তা ভেসে গিয়েছিল, দুটি বড় সেতু ভেঙে পড়েছিল, এবং তপকেশ্বর মহাদেব মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। তিনি জানান, “চামোলিতে অন্তত ২০০ মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন। ৩৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস, ২০ জন আহত এবং ১৪ জন এখনও নিখোঁজ। উদ্ধারকারী দল কাজ করছে, গুরুতর আহতদের ঋষিকেশ এইমসে পাঠানো হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলির দ্রুত মেরামতের কাজ চলছে। সমস্ত প্রশাসনিক দফতর এবং উদ্ধারকারী সংস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
উত্তরাখণ্ডের মানুষ এখন ধ্বংসস্তূপ, বন্যা ও পাহাড় ধসের আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, কিন্তু উদ্ধারকারী দল, প্রশাসন ও ত্রাণকর্মীরা সর্বোচ্চ সতর্কতায় কাজ চালাচ্ছেন।