উত্তম কুমার (Uttam Kumar) ও সুচিত্রা সেন—বাংলা সিনেমার যে জুটি, তাদের নাম শুনলেই মনে আসে স্বর্ণযুগের উজ্জ্বল অধ্যায়। ওটিটির যুগেও এই জুটির সিনেমা ও স্মৃতি এখনও ভোলা যায়নি। তাদের অভিনয়, তাদের ব্যক্তিগত জীবন, সবই আজও অনুরাগীদের কাছে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে শুধু সিনেমার পর্দাতেই নয়, বাস্তবেও এই জুটি নিয়ে গল্প, বন্ধুত্ব আর গুঞ্জন টলিউডে আজও শোনা যায়। সেই বন্ধুত্বের মধ্যেই ঘটে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা, যা আটের দশকে সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে হইচই ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু এই সারপ্রাইজে মূল চরিত্রে ছিলেন সুচিত্রা সেন নয়, বরং তাঁর কন্যা মুনমুন সেন।
ঘটনার সময় সাতের দশকের শেষের দিকে। পরিচালক পার্থপ্রতিম চৌধুরী একটি নতুন চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। ছবিটির মূল গল্পে কেন্দ্রবিন্দু ছিল শ্বশুর-মশাই (Uttam Kumar) ও ছেলের বউয়ের বন্ধুত্ব। সেই সময় বাংলা ছবির জন্য এমন গল্প একেবারে চ্যালেঞ্জিং ছিল। এই ছবির জন্য পরিচালক পার্থপ্রতিম অসাধ্য সাধন করেছিলেন—শ্বশুরের চরিত্রে রাজি করিয়েছিলেন উত্তম কুমারকে (Uttam Kumar), আর তাঁর বিপরীতে বউমার চরিত্রে বেছে নিয়েছিলেন মুনমুন সেনকে।
জানা যায়, এই খবর শুনে দারুণ আনন্দ পেয়েছিলেন সুচিত্রা সেনও। তাঁর মেয়েকে উত্তম কুমারের বিপরীতে দেখার সুযোগ, তাঁকে খুবই এক্সাইটেড করেছিল। মহরতও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক পার্থ, উত্তম কুমার এবং মুনমুন সেন। ছবির নাম ঠিক হয় ‘রাজবধূ’।
কিন্তু কেন এই ছবি তৈরি হল না উত্তম-মুনমুন জুটিতে?
সালটা ১৯৮০, জুলাই মাস। সেই সময় উত্তম কুমার শুটিং করছিলেন ‘ওগো বধূ সুন্দরী’। শুটিং চলাকালীন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর ‘রাজবধূ’ ছবির শুটিং শুরুর আগেই ঘটে বিপর্যয়—১৯৮০ সালের ২৯ জুলাই মারা যান মহানায়ক। ফলে পরিচালক পার্থপ্রতিম এবং মুনমুন সেনের স্বপ্ন অধরা থেকে যায়। পরে ছবিটি তৈরি হয়, উত্তমের স্থলে অভিনয় করেন উৎপল দত্ত, এবং সেই ছবি বক্স অফিসে হিট হয়।