মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ভারতীয় (India) পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তিনি গত মাসে ২৫ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়েছিলেন, তার উপর আবারও ২৫ শতাংশ নতুন শুল্ক চাপানোর ঘোষণা এসেছে। অর্থাৎ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক বসতে চলেছে ভারতীয় পণ্যের উপর (India)। স্বাভাবিকভাবেই এই সিদ্ধান্ত ভারতের বাণিজ্যে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এই কঠিন পরিস্থিতিতেই ভারত তার দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য বন্ধু রাশিয়ার দিকে আরও ঝুঁকছে।
বৃহস্পতিবার মস্কো সফরে গিয়ে ভারতীয় (India) বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন—ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও মজবুত করতে হবে। মস্কোর উপ-প্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্তুরভের পাশে বসে জয়শংকর (India) বলেন, “আমাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে এবং ভিন্নভাবে কাজ করতে হবে। শুল্ক ও নানা বাধা দূর করে সরবরাহ সহজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহন করিডোর, উত্তর সমুদ্রপথ এবং চেন্নাই-ভ্লাদিভোস্তক করিডোর ব্যবহার করে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে আর্থিক লেনদেনকে আরও সহজ ও সুষ্ঠু করতে হবে।”
জয়শংকর আরও জানান, রাশিয়ার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) নিয়ে সম্প্রতি যে আলোচনা হয়েছে, তার শর্তাবলী ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে। তিনি এটিকে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে এক “ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” বলে বর্ণনা করেছেন।
এদিকে ট্রাম্পের চাপের মুখেও রাশিয়া ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতের জন্য তেলের দামে বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছেন। উরালস তেলের ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৩ ডলার পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে রাশিয়া, যা হিসেব অনুযায়ী প্রায় ৫ শতাংশ কম দাম। ফলে ভারত সেপ্টেম্বার ও অক্টোবরে রাশিয়া থেকে আরও বেশি পরিমাণে তেল আমদানি করার বরাত দিয়েছে।
একদিকে আমেরিকার হুমকি, অন্যদিকে রাশিয়ার উদারতা—এই দুইয়ের মধ্যে ভারত স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে তার বাণিজ্য কৌশল একমুখী নয়। বরং ভারতের লক্ষ্য হলো নিজস্ব স্বার্থ সুরক্ষিত রেখে বৈশ্বিক বাণিজ্যে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা।
সহজ ভাষায় বলা যায়, ট্রাম্প যতই চাপ দিন না কেন, ভারত মাথা নোয়াবে না। রাশিয়ার সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে ভারত, যাতে আমেরিকার শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত দেশের বাজার ও অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে।