মেদিনীপুরের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য! কয়েকদিন আগে জলসা দেখতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল দুই বিজেপি কর্মীর (Khejuri)। প্রথমে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের (Khejuri)। কিন্তু শুরু থেকেই দুই পরিবারের দাবি ছিল, তাঁদের খুন করা হয়েছে। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ফের ময়নাতদন্ত করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেই দ্বিতীয় রিপোর্ট জমা পড়তেই চমকে যায় আদালত। কারণ এবার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, মৃতদেহে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন রয়েছে (Khejuri)।
মৃত সুধীর পাইকের ছেলে নন্দন পাইক (Khejuri) বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, “পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। পুলিশ টাকা খেয়ে সব ধামাচাপা দিতে চাইছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শমুদ্ভব দাস পর্যন্ত এসে বলেছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে কাগজে সই করতে। সই করলে তিন লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। খুনের ঘটনা চাপা দিতে চাইছে ওরা।”
অন্যদিকে মৃত সুজিত দাসের বাবা শশাঙ্ক দাস ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলেন, “প্রথম দিন থেকেই পুলিশ শুধু বলেছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু। শুধু বলত এখানে সই করুন, ওখানে সই করুন। কিন্তু আমরা শুনিনি। শুভেন্দু অধিকারী আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তিনিই সুবিচারের লড়াই করছেন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে ভুয়ো রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। পরে এসএসকেএম থেকে এল আসল রিপোর্ট।”
তবে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন খেজুরি-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শমুদ্ভব দাস। তিনি বলেন, “এমন কিছু জানা নেই। সবটাই মিথ্যা। আইনি প্রক্রিয়া চলবে।”
ঘটনাটি ঘটেছিল খেজুরি থানার ভাঙনমারি এলাকায়। মেলা চলাকালীন বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়ে সুধীর পাইক ও সুজিত দাস গুরুতর আহত হন। স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। যদিও বিজেপির অভিযোগ, আসলে মেলায় দুষ্কৃতীরা হামলা করেছিল, সেই কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই দুই বিজেপি কর্মীর। এরপরেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। বিজেপি কর্মীরা খেজুরি থানা ঘেরাও করে এবং খুনের অভিযোগ তুলে বনধ ডাকে।
প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর কথা বলা হলেও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে উঠে আসে অন্য তথ্য। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি অত্যন্ত বিরক্ত। প্রথম রিপোর্টে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছিল। অথচ দ্বিতীয় রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”