লোকসভায় বুধবার দেখা গেল প্রবল উত্তেজনা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করতেই শুরু হল বিরোধীদের তীব্র বিক্ষোভ। কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, এই বিল আসলে মুখ্যমন্ত্রীদের পদ থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র। তাদের দাবি, বিলটি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। বিরোধীরা হইচই শুরু করে এবং এমনকি বিলের কাগজ ছুড়ে দেন অমিত শাহের দিকে। গোলমালের জেরে দুপুর তিনটে পর্যন্ত লোকসভা (Amit Shah) মুলতুবি হয়ে যায়।
একই দিনে কেন্দ্র আরও দুটি বিল পেশ করে—কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনিক সংশোধনী বিল এবং জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল, ২০২৫। তবে সবচেয়ে আলোচিত বিল ছিল ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল (Amit Shah) । এই বিলে বলা হয়েছে, যদি প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা কোনও মন্ত্রী গুরুতর ফৌজদারি অপরাধে আটক বা গ্রেফতার হন এবং টানা ৩০ দিন জেলে থাকেন, তবে ৩১তম দিনে তাঁর মন্ত্রিত্বের পদ চলে যাবে।
অমিত শাহ (Amit Shah) লোকসভায় দাঁড়িয়ে বলেন, এই বিল যুগ্ম সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হবে, যেখানে বিরোধীরাও তাঁদের মতামত দিতে পারবেন। তিনি কড়া ভাষায় বলেন, “আমরা এতটা নির্লজ্জ নই যে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ নিয়েও সাংবিধানিক পদ আঁকড়ে থাকব।”
এই বিল নিয়ে বিরোধী শিবিরে প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এআইএমআইএম সাংসদ আসাউদ্দিন ওয়াইসি অভিযোগ করেন, বিজেপি দেশকে পুলিশ রাজ্যে পরিণত করতে চাইছে। তাঁর প্রশ্ন, “প্রধানমন্ত্রীকে কে গ্রেফতার করবে? এই বিলের মাধ্যমে বিজেপি গোটা দেশকে ভয় দেখাতে চাইছে।”
কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢ়রা বলেন, “আগামী দিনে কোনও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে ৩০ দিনের জন্য জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হলে তাঁকে বাধ্য হয়ে পদ ছাড়তে হবে। এটা সম্পূর্ণ সংবিধান বিরোধী, অগণতান্ত্রিক এবং দুঃখজনক।”
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ কয়েকজন বিরোধী সাংসদ বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলেন এবং তা ছুড়ে মারেন অমিত শাহের দিকে। এ সময় কংগ্রেস সাংসদ কেসি বেণুগোপালের সঙ্গে অমিত শাহের তীব্র বচসাও হয়। এমনকি সোহরাবুদ্দিন শেখ ফেক এনকাউন্টার মামলায় অমিত শাহের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ টেনে আনেন বিরোধীরা। উত্তরে অমিত শাহ জানান, “হ্যাঁ, আমি গ্রেফতার হয়েছিলাম এবং তখনই ইস্তফা দিয়েছিলাম।”