বছরের পর বছর পরস্পরকে প্রকাশ্যে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। ২০১৯-এর হাউডি মোদি হোক বা ২০২০-র ‘নমস্তে ট্রাম্প’, একসঙ্গে লক্ষাধিক জনতার সামনে মঞ্চে উঠে বারবার বন্ধুত্বের নিদর্শন রেখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Modi- trump)। কিন্তু এবার যেন সেই ‘ভাইচারা’র গল্পে ধস নামল। মোদির সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং ট্রাম্পের ‘শুল্কবোমা’ দুই দেশের সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নতুন এক রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ইঙ্গিত দিচ্ছে ন।
সম্প্রতি রাশিয়া থেকে ভারতীয় তেল আমদানি নিয়ে ট্রাম্প ফের (Modi- trump) কড়া অবস্থান নেন। তাঁর অভিযোগ, ভারত সরাসরি ও পরোক্ষভাবে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। সেই কারণে ভারতের উপর আরও বেশি শুল্ক চাপানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে দু’দফায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসন ন। মোদি সরকারের অবস্থান ছিল, এটি দেশের কৃষক এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থরক্ষায় অপরিহার্য।
তবে এবার মোদির (Modi- trump) প্রতিক্রিয়া আরও সরাসরি ও তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, “কৃষকদের স্বার্থ আমাদের অগ্রাধিকার। ভারত কখনও কৃষক ও মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না।” এর সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন, “আমি জানি, এই সিদ্ধান্তের জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবেও বিরাট মূল্য চোকাতে হবে, তবু আমি প্রস্তুত, কারণ এটা দেশের স্বার্থের প্রশ্ন।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মোদির এই “ব্যক্তিগত ক্ষতির” মন্তব্য আসলে ট্রাম্পের সঙ্গে পুরনো সম্পর্কের টানাপোড়েনকেই সামনে এনে দিচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি একপ্রকার ‘বন্ধুত্বচ্যুতি’-র ঘোষণা।
এই পরিস্থিতি সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে— তবে কি ট্রাম্প-মোদির (Modi- trump) সম্পর্কেও দেখা দিল কাঁটা? ২০১৯ সালে টেক্সাসের হাউডি মোদি সভায় প্রায় ৫০ হাজার ভারতীয় প্রবাসীর সামনে কূটনৈতিক সীমারেখা পেরিয়ে মোদি বলেছিলেন, “অব কি বার, ট্রাম্প সরকার!” ২০২০ সালে ট্রাম্পের ভারত সফরে আহমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামে লক্ষাধিক মানুষের সামনে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ ধ্বনি তুলেছিলেন মোদি নিজেই। সেই উষ্ণ সম্পর্ক আজ প্রশ্নের মুখে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প নিজেও অতীতে মোদিকে নিজের “বন্ধু” বলেই উল্লেখ করেছিলেন। এমনকি লোকসভা ভোটের আগে বলেছিলেন, “মোদিই ফিরবে ক্ষমতায়।” সেই সম্পর্কেই আজ চিড় ধরেছে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
মোদির কড়া মন্তব্যে স্পষ্ট, তিনি দেশে কৃষকস্বার্থে কোনও আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না—even if it costs him personally.