সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মেলেনি—এমন অভিযোগ নিয়ে ব্লকের ‘পাড়ায় সমাধান’ শিবিরে এসে অঝোরে কেঁদে ফেললেন মালদহের (Maldah) এক অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি। কিন্তু তাঁদের চোখের জলও গলাতে পারল না প্রশাসনকে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকায় বড় প্রশ্ন উঠেছে, আর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা (Maldah) ।
রারিয়াল গ্রামের ৬৪ বছরের কলিমুদ্দিন আজ আর কাজ করতে পারেন না (Maldah) । বয়সের ভারে ন্যুব্জ শরীর, বাড়িতে স্ত্রী এবং বিশেষভাবে সক্ষম ছেলে। প্রায় ১৫ বছর আগে ভেঙে পড়েছে তাঁদের কাঁচা ঘর, সেই ভগ্নদশা জরাজীর্ণ ঘরেই চলছে দিনযাপন ন। লক্ষ্মীর ভান্ডার, আবাস যোজনা, বার্ধক্য ভাতা—কোনও সরকারি প্রকল্পেরই সুবিধা মেলেনি। এমনকি রেশন সুবিধাও ঠিকমতো পান না তাঁরা। অভাবের চাপে কখনও শাকপাতা, কখনও একবেলা খেয়েই কাটছে দিন।
বুধবার রারিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘পাড়ায় সমাধান’ শিবির বসে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন মালদহের জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া এবং রাজ্যের পরিবহন দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন। আশা নিয়ে কলিমুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী সামেনুর বিবি উপস্থিত হন। ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌমেন মণ্ডলের কাছে দুরবস্থার কথা বলতে গিয়েই কেঁদে ফেলেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ, বিডিও তাঁদের আর্তি উপেক্ষা করেন। আবেদন সত্ত্বেও কোনও আশ্বাস মেলেনি, কেবল বলা হয়—“টাকা এলে দেওয়া হবে।”
প্রতিবেশীরাও জানাচ্ছেন, ওই দম্পতির চরম অসহায়তার কথা। প্রশ্ন উঠছে—আর কত গরিব হলে মিলবে সরকারি সাহায্য? বিডিও সৌমেন মণ্ডল ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে চাননি (Maldah) । কলিমুদ্দিনের ক্ষোভ, “দশ-পনেরো বছর ধরে ভাঙা বাড়িতে আছি। কেউ কাজ করে দেয় না। বিডিও বলছেন, আমি কিছু করে দিতে পারব না।”
ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছে বিজেপি। জেলা বিজেপি সম্পাদক রূপেশ আগরওয়ালের দাবি, “ছাব্বিশের নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘আমার পাড়া, সমস্যার সমাধান’ বলে ভাঁওতা দিচ্ছে তৃণমূল। যদি সমাধান হতো, তাহলে এই পরিবারের দুর্দশার অবসান হতো।”
অন্যদিকে, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির স্বামী তথা পঞ্চায়েত সদস্য আবুল হোসেন আসরাফির বক্তব্য, “আগে কী হয়েছে জানি না, তবে অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখব। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা যেন তাঁরা পান, তা নিশ্চিত করব।”