সমাজের ট্যাবু ভাঙতে বলিউড তারকাদের ভূমিকা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। পর্দায় যেমন সাহসী চরিত্রে দেখা যায় তাঁদের, তেমনি বাস্তবেও নানা সামাজিক কুসংস্কারকে চ্যালেঞ্জ করেন তাঁরা (Jaya Bachchan)। ঋতুস্রাব নিয়ে সমাজে যে চুপচাপ লজ্জার দেওয়াল গড়ে ওঠে, তা ভাঙতেই এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ জয়া বচ্চন (Jaya Bachchan)। সম্প্রতি তাঁর নাতনি নভেলি নন্দার পডকাস্টে এসে শেয়ার করলেন এক রুদ্ধশ্বাস অভিজ্ঞতা—যা শুনে হতবাক নেটিজেনরা।
জয়া (Jaya Bachchan) বলেন, একবার একটি ছবির আউটডোর শুটিংয়ে ছিলেন তিনি। তাঁর বিপরীতে ছিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। হঠাৎ শুটিং চলাকালীনই তিনি লক্ষ্য করেন, তাঁর শাড়ির পেছনের অংশ পুরোপুরি রক্তে ভিজে গেছে। বুঝতে পারেন, ঋতুস্রাব আচমকাই শুরু হয়েছে। কিন্তু সে সময় আশেপাশে স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলানোর মতো কোনও নিরাপদ জায়গা ছিল না। পরিস্থিতি এমনই যে, বাধ্য হয়ে রক্তভেজা শাড়ি পরে জঙ্গলের ভিতরে ছুটতে হয়েছিল তাঁকে (Jaya Bachchan)। একটি গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলাতে হয়েছিল, কারণ আশেপাশে কোনও প্রাইভেট জায়গা ছিল না।
এই ঘটনার সময় পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শুটিং ইউনিটের পুরুষরাও। সহানুভূতির নজরেই তাঁরা দেখেছেন এই পরিস্থিতিকে। এমনকি জয়ার (Jaya Bachchan) সম্মান রক্ষার্থে শুটিংয়ে বিরতিও নেওয়া হয়। ধর্মেন্দ্র নিজে এগিয়ে এসে জয়ার হাতে তুলে দেন চা ও কফি। জয়া বলেন, “ওই মুহূর্তে ওঁর ব্যবহার সত্যিই আমার মনে দাগ কেটে দেয়। কোনও রকম লজ্জা নয়, বরং আন্তরিকতার ছোঁয়া পেয়েছিলাম।”
বলিউডের আরও অনেক অভিনেত্রীর মতো দীপিকা পাড়ুকোনও পিরিয়ড নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, কীভাবে তাঁর মা তাঁকে ও বান্ধবীকে পিরিয়ড সম্পর্কে জ্ঞান দিয়েছিলেন ছোটবেলায়। কিন্তু জয় বচ্চনের এই শেয়ার করা ঘটনাটি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।
ঋতুস্রাব লজ্জার নয়, শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। জয়া বচ্চনের এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে, মানুষ চাইলে সহানুভূতি দিয়ে পরিস্থিতিকে সহজ করে তুলতে পারেন। সমাজের চোখে লুকিয়ে নয়, মুখ তুলে বলা উচিত নিজের শরীরের বাস্তবতা। এবং এই বার্তাটাই এবার আরও গর্বের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ুক।