গুজরাটের সুরাটে ফের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হলেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা (Migrant Workers)। বাংলাদেশি সন্দেহে হেনস্থা ও শারীরিক নির্যাতনের মুখে পড়তে হল পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা ও সবংয়ের ১০ যুবককে। তাঁদের মধ্যে ৮ জনই পিংলার মালিগ্রামের বাসিন্দা। অত্যাচারের সেই বিভীষিকা থেকে রেহাই মেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক হস্তক্ষেপেই (Migrant Workers)।
শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ পিংলায় নিজের বাড়িতে ফিরে বুদ্ধদেব বারিক (Migrant Workers) জানান, কাজের খোঁজে গিয়েছিলেন গুজরাটের সুরাটে, সেখানেই ঘটে জীবন কাঁপানো ঘটনা। বিকেলে ট্রেনে পৌঁছে এক হোটেলে উঠেছিলেন তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা। সন্ধ্যা ছটা নাগাদ ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ দরজা ভেঙে হানা দেয় পুলিশ। তাঁদের বাংলাদেশি বলে গালিগালাজ করা হয়, বলা হয় সন্ত্রাসবাদী। এরপর শুরু হয় নির্যাতন (Migrant Workers)।
বুদ্ধদেব (Migrant Workers) বলেন, “বুকে, পেটে লাথি মারে। চুল ধরে টেনে নিয়ে যায় থানায়। আমরা ফোন করতে গেলে মোবাইল কেড়ে নেয়। লকআপে ঢোকায়। সকালে আধার কার্ড দেখতে চায়, বলে এগুলো জাল। কেউ কেউ বলে ঝুলিয়ে মারা উচিত আমাদের।” এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়—”আর কিছু বললে বাংলাদেশে ছেড়ে দেওয়া হবে।”
এই ঘটনার পরই পরিবারের তরফে বাংলার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য প্রশাসন গুজরাট প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলায় শেষে তাঁদের মুক্তি মেলে। বুদ্ধদেব(Migrant Workers) বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই বাড়ি ফিরতে পারলাম। মনে হচ্ছে যেন নতুন জীবন ফিরে পেলাম।”
প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাসে একাধিকবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর এই ধরনের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলে সন্দেহ, পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়া, মারধর, লুটপাট, এমনকি উপার্জন কেড়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ সামনে এসেছে বারবার। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে প্রতিবাদী মিছিল করার পর এবার জঙ্গলমহলেও পথে নামছেন তিনি।
রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে চালু করা হয়েছে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর, যাতে বিপদে পড়লে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা দ্রুত সাহায্য পেতে পারেন।