উত্তর কলকাতার (Kolkata) এক মধ্যবিত্ত পরিবার ছুটি কাটাতে গিয়েছিল কাশ্মীরের মনোরম উপত্যকায়। পাহাড়ি পথ ধরে কখনও সবুজে মোড়া উপত্যকা, আবার কখনও বা পাথুরে পর্বতের পাশ দিয়ে গাড়ি ছুটে চলেছে। সেই সফরে চোখে চোখে শুরু হয়েছিল এক সম্পর্ক, যে সম্পর্ক এক সময় গড়ায় প্রেমে, আর এখন তা নিয়ে উঠেছে ভয়ানক অভিযোগ—অপহরণের অভিযোগ!
কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়ে গাড়ির চালক দীপক সিংয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বে জড়ান দম্পতির (Kolkata) কলেজপড়ুয়া কন্যা। প্রথমে কিছু সময় চোখে চোখে কথা, তারপর গাড়ি থেমে গেলে কিছু কথাবার্তা, আর তারপরই ফোন নম্বরের আদানপ্রদান। কলকাতায় (Kolkata) ফিরে এসেও সম্পর্ক থেমে থাকেনি। নিয়মিত হোয়াটস অ্যাপ, ভিডিও কলে চলত কথা। কিন্তু সেই বন্ধুত্ব যে এমন পরিণতির দিকে গড়াবে, তা ভাবতেও পারেননি ওই ছাত্রীর মা-বাবা।
গত ২৪ জুন কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি ওই তরুণী। পরদিনই চিৎপুর থানায় মিসিং ডায়েরি করেন অভিভাবকরা। এরপর হোয়াটস অ্যাপে মেয়ে যোগাযোগ করেন জানিয়ে যে তিনি ভালো আছেন, এমনকি অভিভাবকদের অনুরোধে বিয়ের কথাও মেনে নেন। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—তিনি কোথায়?
অভিভাবকরা প্রথমে ভেবেছিলেন, দীপক তাঁকে নিয়ে গেছেন জম্মু-কাশ্মীরে। কিন্তু রবিবার তাঁদের কাছে একটি হোয়াটস অ্যাপ লিঙ্ক আসে, যেখানে একটি হোটেলের ঠিকানা দেখে বোঝা যায় মেয়ে রয়েছেন অসমের ডিব্রুগড়ে। এর পরেই অভিভাবকরা সাফ অভিযোগ করেন—তাঁদের মেয়েকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, দীপক সিং নামের জম্মুর ওই যুবকই ভ্রমণের সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তিনিই কলকাতায় এসে ওই তরুণীকে নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। বর্তমানে সেই যুবকের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করেছে চিৎপুর থানার পুলিশ। অসমের ওই হোটেলকে কেন্দ্র করে তদন্ত শুরু হয়েছে, এবং প্রয়োজনে পুলিশ দল গিয়ে তরুণীকে উদ্ধারের অভিযান চালাতে পারে।
এই ঘটনা যেন রূপকথার প্রেম নয়, বরং বাস্তবের অন্ধকার অধ্যায়। একটি নিরীহ ভ্রমণ শুরু হয়েছিল পরিবারের খুশির মুহূর্ত দিয়ে, শেষ পর্যন্ত তা গিয়ে ঠেকল এক অপহরণের অভিযোগে, পুলিশি তদন্তে এবং ভয়ানক দুশ্চিন্তায়!