ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম মিতালি রাজ (Mitali Raj)। যাঁর ব্যাট হাতে নির্ভরতা ছিল ভারতীয় দলের মেরুদণ্ড। দীর্ঘ কেরিয়ারে নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতীয় নারী ক্রিকেটকে এক অনন্য উচ্চতায়। ২০১৭ সালের মহিলা বিশ্বকাপ ফাইনালে তাঁর (Mitali Raj) নেতৃত্বেই ভারতের দল পৌঁছেছিল চূড়ান্ত পর্বে। মিতালির ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি আরেকটি দৃশ্য সবসময় মন কাড়ত ক্রিকেটপ্রেমীদের—মাঠে নামার আগে সাইডলাইনে বইয়ে মুখ গুঁজে থাকতেন তিনি, এক নির্জন পাঠকের মতো।
সেই শান্ত, সংযত ক্রিকেটার, যাঁকে নিয়ে সর্বত্র শ্রদ্ধা ও সম্মান, সম্প্রতি জানালেন এমন এক ঘটনা, যা শুনে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছেন ভক্তরাও (Mitali Raj)। এক সাক্ষাৎকারে মিতালি রাজ তুলে ধরলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের একটি ম্যাচে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার কথা (Mitali Raj)।
লাল্লনটপে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তাঁর (Mitali Raj) খেলোয়াড়ি জীবনে কখনও স্লেজিংয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে কি না। মিতালির উত্তর ছিল স্পষ্ট—তাঁদের সময় মহিলা ক্রিকেটে আক্রমণাত্মক স্লেজিং বা ব্যক্তিগত আঘাত খুব একটা দেখা যেত না, বরং প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করতে কিছু ‘মাইন্ডগেম’ চলত। তবে, একটি ঘটনা তাঁর মনে গভীর ছাপ ফেলে গেছে।
মিতালি (Mitali Raj) জানান, “একবার সত্যিই খুব অবাক হয়েছিলাম। কারণ, এমন ধরনের কথা আগে কখনও শুনিনি। বাংলাদেশে বিশ্বকাপ চলছিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল। ওভারের মাঝে পাকিস্তানের এক বোলার আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এমন কিছু বলেছিল, যা শুনে চমকে উঠেছিলাম। মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটেছিল নিঃসন্দেহে।”
মিতালি যদিও স্পষ্ট করে বলেননি সেই বোলার ঠিক কী বলেছিলেন, কারণ সেই ভাষা উচ্চারণ করতেও তাঁর অস্বস্তি হয়। তবে তাঁর কথায় বোঝা যায়, ওই মন্তব্য ছিল অসম্মানজনক এবং কুরুচিকর।
তিনি আরও জানান, “আউট হয়ে ফেরার সময় ফের সেই বোলার আবার কিছু বলল। ওর নাম পর্যন্ত মনে নেই, কারণ নিয়মিত প্লেয়ার ছিল না। আমি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমাদের টিম ম্যানেজারকে জানাই এবং বলি যে এটার ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” ম্যাচ শেষে যখন খেলোয়াড়রা সৌজন্য হ্যান্ডশেক করছিলেন, তখনও সেই বোলার মিতালির সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকার করে।
ভারতীয় দলের টিম ম্যানেজার এরপর পাকিস্তানের টিম ম্যানেজারের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করেন। পাকিস্তানের টিম ম্যানেজার অবশ্যই দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সেই প্লেয়ারের হয়ে ক্ষমা চান।
এই ঘটনা আজ অনেক পুরনো হলেও মিতালির কণ্ঠে স্পষ্ট ছিল সেই সময়কার অপমান এবং হতবাক হওয়ার অনুভব। একজন কিংবদন্তি ক্রিকেটারের সঙ্গে এমন আচরণ যে কতটা দুঃখজনক এবং অবাঞ্ছিত, তা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝিয়ে দিলেন তিনি।