বাংলার ভোটার তালিকা ঘিরে নতুন করে বিতর্কে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এবার বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর দাবি, সীমান্তবর্তী এলাকায় বেআইনিভাবে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার তালিকায় নাম তোলা হচ্ছে। এই অভিযোগ নিয়ে তিনি (Suvendu Adhikari) সরাসরি চিঠি দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে।
শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) অভিযোগ, গত এক সপ্তাহে সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭০ হাজারেরও বেশি ফর্ম জমা পড়েছে, যেখানে সাধারণত এই সংখ্যাটা ২০-২৫ হাজারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। তাঁর দাবি, রাজ্য প্রশাসন বেআইনিভাবে ডোমিসাইল সার্টিফিকেট দিয়ে বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলার ব্যবস্থা করছে। ফলে এই ঘটনা গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনতে পারে, বলেই আশঙ্কা শুভেন্দুর।
এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করেছেন, ২৫ জুলাইয়ের পর জারি হওয়া কোনও ডোমিসাইল সার্টিফিকেট যাতে SIR-এর ক্ষেত্রে গ্রাহ্য না করা হয়। তাঁর এই পদক্ষেপ ঘিরে রাজ্যে আসন্ন SIR (Special Summary Revision) নিয়ে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই বাংলায় শুরু হতে পারে এই বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ।
নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, SIR-এর জন্য প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ। এক সপ্তাহেই অনলাইনে ৭০ হাজারের বেশি নাগরিক ভোটার কার্ড সংশোধনের আবেদন করেছেন, যার বড় অংশ এসেছে সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে। শুধু নতুন ভোটার নয়, তালিকায় নিজের ঠিকানা বা এলাকার পরিবর্তনের আবেদনও অনেকেই করেছেন।
এই আবহেই সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “বাংলায় একটি ভোটারও যদি তালিকা থেকে বাদ যায়, তাহলে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ হবে। ঘেরাও কর্মসূচি, মিছিল ও স্লোগানে রাস্তায় নামবে মানুষ।” তাঁর অভিযোগ, বিজেপি ও নির্বাচন কমিশন মিলে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে ও আতঙ্ক তৈরি করছে।
তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তীরও বক্তব্য, “সারা দেশে মানুষকে আতঙ্কে রেখেছে বিজেপি। বাংলার মানুষ আজ উদ্বেগে। নির্বাচন কমিশনের উপর থেকেও মানুষের আস্থা কমছে।”
সব মিলিয়ে বাংলার ভোটার তালিকা নিয়ে বিজেপি বনাম তৃণমূলের সংঘাত আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল। ভোটারদের নাম তোলা, বাদ পড়া ও রাজনৈতিক প্রভাব—এসবকে ঘিরেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা।