নারী পাচার যেন দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে উত্তরবঙ্গে (Siliguri)। কিছুদিন আগেই জিআরপি চমকপ্রদভাবে ৫৬ জন তরুণীকে ট্রেনে পাচার হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছিল। সেইবার পটনার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসে সিট নম্বর ও কোচ নম্বর পর্যন্ত নির্দিষ্ট ছিল (Siliguri)। এই ঘটনা সামনে আসতেই পাচারকারীরা যেন সাবধান হয়ে গিয়েছে। এবার ট্রেন ছেড়ে তারা বেছে নিয়েছে নতুন পথ—বাস রুট। তবে সেই নতুন ছকও এবার ধাক্কা খেল পুলিশের তৎপরতায় (Siliguri)।
রবিবার রাতে শিলিগুড়ি (Siliguri) শহর ছাড়ার আগেই একটি বাস থেকে ৩৪ জন তরুণীকে উদ্ধার করে প্রধাননগর থানার পুলিশ। ওই তরুণীদের তামিলনাড়ুতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হচ্ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। পাচারকারীদের ছক অনুযায়ী, ওই তরুণীদের বাংলা পেরিয়ে রাঁচি হয়ে সোজা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তামিলনাড়ুর কোনও এলাকায় (Siliguri)।
তবে পুলিশি চেকিংয়ে ধরা পড়ে যায় সব কিছু। সন্ধ্যার দিকে বাসটিকে আটকায় পুলিশ। গোটা বাস ভর্তি মহিলা দেখে সন্দেহ জাগে কর্তব্যরত অফিসারদের। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হতেই ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য। অনেকেই বলেন, তাঁরা তামিলনাড়ু যাচ্ছেন কাজের সূত্রে। কিন্তু কেউই দেখাতে পারেননি কোনও বৈধ নিয়োগপত্র বা পরিচয়পত্র। এই অসংগতি দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয়—এই বাসেই পাচার হচ্ছে তরুণীরা।
এরপরেই বাসের দায়িত্বে থাকা তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে দুই জন মহিলা শিলিগুড়ির বাসিন্দা এবং এক জন এলাকার কুখ্যাত নারী পাচার চক্রের এজেন্ট। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, ওই এজেন্ট প্রতি তরুণী পাচারে পেত ৪ হাজার টাকা। তরুণীদের বেশিরভাগই আলিপুরদুয়ার সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন চা-বাগান ও প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আনা হয়েছিল।
এই ঘটনার পরে ধৃত তিনজনকে আদালতে পেশ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ৩৪ জন তরুণীর মধ্যে কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদেরও শিগগির পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে ফের একবার প্রমাণিত হল, নারী পাচারকারীরা কৌশল বদলালেও পুলিশও ততটাই সতর্ক। ট্রেন থেকে বাস, রুট বদলালেও পাচারের পাঁয়তারা রোখার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের পুলিশ বাহিনী।