Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • Important
  • ইংল্যান্ডে কে.এল. রাহুলের মহা-রূপান্তর! ৪৬ বছর পর রেকর্ড গড়লেন ভারতীয় ওপেনার, অবশেষে নিজেকে প্রমাণ করলেন
খেলা

ইংল্যান্ডে কে.এল. রাহুলের মহা-রূপান্তর! ৪৬ বছর পর রেকর্ড গড়লেন ভারতীয় ওপেনার, অবশেষে নিজেকে প্রমাণ করলেন

KL Rahul
Email :3

কে.এল. রাহুলের (KL Rahul) শরীরে ট্যাটু ছিল সবসময়, ব্যাটিংয়ে ছিল নীরব অথচ আত্মবিশ্বাসী এক সোয়্যাগ, আর তার ব্যাটের ফরোয়ার্ড ডিফেন্সও যেন ছিল ক্যানভাসে তোলা তুলির ছোঁয়ার মতো। কিন্তু এতদিন ধরে তার দুর্দান্ত স্ট্রোকপ্লের মাঝেও একটা জিনিস অনুপস্থিত ছিল — নিজের নামে লেখা একটা সিরিজ। একটি সিরিজ যা তার পরিচয়ের প্রতীক হবে। অবশেষে, ৩৩ বছর বয়সে, সেই মুহূর্তটা তিনি পেয়েছেন ইংল্যান্ডে (KL Rahul)।

রাহুলের টেস্ট ক্যারিয়ার এতদিন ছিল যেন শুধু ভূমিকা, কখনও SCG-তে শতরান, কখনও ওভালে ঝলমলে ১৪৯ — কিন্তু ধারাবাহিকতা ছিল না। শুরুটা দুর্দান্ত, তারপর ঝিমিয়ে পড়া — এটা যেন ছিল এক অভ্যাস। কিন্তু এবারের ইংল্যান্ড সফরে সবকিছু বদলে গেছে (KL Rahul)।

এই সিরিজে রাহুল (KL Rahul) ভারতীয় ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে অভিজ্ঞ নাম। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, পুজারা কিংবা রাহানের মতো ব্যাটাররা অনুপস্থিত। আর এবার রাহুলের ছিল না কোনও ভূমিকাজট, না ছিল উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব, না কোনও পজিশন নিয়ে দ্বিধা। তিনি শুধু একজন ওপেনার — একজন ব্যাটিং লিডার।

আর সেই দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন বুক চিতিয়ে।
সিরিজে এখনও পর্যন্ত ৫০৮ রান, ৯৭৮ বল, দুই সেঞ্চুরি, দুই হাফসেঞ্চুরি — কিন্তু শুধু সংখ্যায় নয়, এই রানগুলোর মানেই আলাদা। কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য্য, ঝুঁকির মুখে পা না হড়কানো, আর মানসিক শক্তির অসাধারণ প্রদর্শন।

লর্ডসে হেরেও, তিনি (KL Rahul) ওপেনিংয়ে ৪২ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তুলেন ১৩৭ — অনবদ্য, পরিপক্ব এক ইনিংস। এজবাস্টনে ভারতের ৩৩৬ রানের জয়ের ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ৫৫ রান। এরপর লর্ডসে এল সেই শতরান — ক্লাসিক এক ইনিংস, মেঘলা আকাশে, মারাত্মক বোলিংয়ের বিরুদ্ধে শান্ত, আত্মবিশ্বাসী এক ইনিংস।

ম্যানচেস্টারে যখন ভারত প্রথম ইনিংসে ৩৫৮-এ গুটিয়ে যায় এবং ইংল্যান্ড ১৫৭ ওভার ব্যাট করে, তখন ফের ওপেন করতে নামেন রাহুল (KL Rahul)। শুরুতেই ভারতের দুই উইকেট পড়ে গেলে, ৩১১ রানের পিছিয়ে থাকা অবস্থায় রাহুল ব্যাট করেন যেন কিছুই হয়নি। দুই সেশন ব্যাট করে অপরাজিত — যেন মানসিক দৃঢ়তার প্রতিমূর্তি।

এটাই সেই মুহূর্ত, যখন কে.এল. রাহুল নিজেকে ছাড়িয়ে গেলেন।

স্রেফ এক প্রান্ত ধরে রাখেননি, পুরো ব্যাটিংয়ের ছন্দটাই গড়ে দিচ্ছিলেন। পুরনো দিনের টেস্ট ব্যাটিং — ছেড়ে দেওয়া, ঠেকানো, এরপর শান্তভাবে চার মারা। জোফরা আর্চার বারবার পরাস্ত করলে হেসে উত্তর দিচ্ছেন, ডসনের বল অফ স্টাম্পের বাইরে গেলে মাথা নেড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ৭১ বলে ২০ রান নিয়ে শুরু করে, পরের ১৩৯ বলে ৬৭ — সময় নিয়ে গড়ে তোলা এক ইনিংস।

৪৬ বছর পর, বিদেশের মাটিতে কোনও ভারতীয় ওপেনার টেস্ট সিরিজে ৫০০ রান পূর্ণ করলেন। এবং সেটা যেন একেবারে অনিবার্য ছিল।

সঞ্জয় মঞ্জরেকার মন্তব্য করেছেন, “ও হয়তো আগে থেকেই ম্যাচিউর ছিল, শুধু দায়িত্বের ভারেই হারিয়ে যাচ্ছিল। এখন ও জানে কিভাবে ফর্ম ধরে রাখতে হয়। আগে যেটা হারিয়ে যেত এক ম্যাচ পরেই, এখন সেটা টেনে নিয়ে যাচ্ছে সিরিজজুড়ে।”

মঞ্জরেকার টেকনিক্যাল দিকও তুলে ধরেছেন — “আগে অনেক বেশি flashy cover drive খেলত, এখন রান আসছে স্কয়ার এবং পেছনের দিকে। ঠাণ্ডা মাথায়, জমাট ব্যাটিং করছে। শট সিলেকশন পরিণত হয়েছে। মানসিকভাবে দুর্দান্তভাবে প্রস্তুত।”

এখন রাহুল শুধু শট খেলছেন না — দৃঢ়তা দেখাচ্ছেন। বেন স্টোকস আক্রমণাত্মক ফিল্ড সাজালেও তিনি উত্তেজনায় ভেসে যাচ্ছেন না। আগে যেখানে ঝুঁকি নিতেন, এখন সেখানে ধৈর্য ধরছেন। এখন আর নিজেকে প্রমাণ করার তাড়া নেই, কারণ তিনি জানেন — তিনি দলে আছেন তার নিজের নামেই।

সবচেয়ে বড় কথা, এবার রাহুলকে তার উপযুক্ত জায়গা দেওয়া হয়েছে। তিনি আর ‘ফিল-ইন’ নয়, ‘অ্যাডজাস্টেবল’ নয় — তিনি হলেন মূল স্তম্ভ। তাঁর চারপাশে ঘুরছে গিল, জয়সওয়াল, নাইরদের মতো পরবর্তী প্রজন্মের ব্যাটাররা।

আর রাহুল, একের পর এক ম্যাচে দিচ্ছেন তার প্রমাণ।

চতুর্থ দিনের সেই এক ইনিংস — নিরব অথচ দৃপ্ত। কোনও হুটোপাটি নয়, বরং ক্লাসিক এক টেস্ট ইনিংস। ৩৬ রানে ইনসাইড এজে লেগ স্টাম্প বাঁচলেও, ভাগ্য তো বরাবর সাহসীদের সঙ্গেই থাকে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts