বাঁকুড়ার (Bankura) বগা গ্রামে এক ভয়াবহ সত্যি উঠে এল তিনদিনের তদন্তে। যা শুনে শিউরে উঠছে গোটা রাজ্য। নিজেরই দেড় বছরের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে এক দম্পতি। আর সেই লোমহর্ষক সত্যি প্রকাশ্যে এল পুলিশি জেরায়। শিশুকন্যার(Bankura) গলা টিপে খুনের দায় অবশেষে স্বীকার করেছে তার বাবা প্রশান্ত বাউরি এবং মা মুন্নি বাউরি। শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশের সামনে ভেঙে পড়ে তারা দুজনেই।
তিনদিন আগে, বুধবার রাতে ঘরের মেঝেতে বিছানা পেতে তিন সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন পেশায় জনমজুর প্রশান্ত (Bankura) ও তাঁর স্ত্রী মুন্নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, দুই সন্তান ঘুমোলেও নিখোঁজ দেড় বছরের শিশুকন্যা। তড়িঘড়ি শুরু হয় তল্লাশি। টানা আড়াই দিন ধরে প্রায় আড়াই কিলোমিটার জুড়ে চলে চিরুনি তল্লাশি। নিখোঁজ শিশুকে খুঁজে পেতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মা-বাবাকে (Bankura) । কিন্তু একাধিকবার অসঙ্গতি ধরা পড়তেই সন্দেহ গাঢ় হতে থাকে পুলিশের।
শেষমেশ শনিবার রাতে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে দম্পতি ভেঙে পড়ে। জানায়, বুধবার গভীর রাতে নিজের মেয়েকে খুন করেছে প্রশান্ত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বহুদিন ধরেই স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ ছিল তার। এমনকি, চার বছর ধরে দাম্পত্যে শারীরিক সম্পর্কও ছিল না। তার মধ্যেই স্ত্রী গর্ভবতী হলে সন্দেহ তীব্র হয় প্রশান্তর। সন্তান জন্মানোর পরই তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সে।
ঘটনার দিন, মদ্যপ অবস্থায় নিজের ঘুমন্ত মেয়ের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে। স্ত্রীর ঘুম ভেঙে গেলেও কিছু করতে পারেনি। ভোরবেলা শিশুর দেহ বাড়ি থেকে প্রায় ৭০০ মিটার দূরে একটি ঝোপে ফেলে আসে সে। এরপর বাড়ি ফিরে নিখোঁজ নাটক শুরু করে। পুলিশি জেরায় সেই ঝোপে দেহ লুকিয়ে রাখার কথাও স্বীকার করে।
ঘটনার চরম বীভৎসতা তখনই প্রকাশ্যে আসে, যখন ওই ঝোপ থেকে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করে পুলিশ। প্রশ্ন ওঠে, মাত্র তিন-চার দিনেই কীভাবে দেহ কঙ্কালে পরিণত হল? প্রাথমিক তদন্ত বলছে, ঝোপে পড়ে থাকা অবস্থায় শিয়াল, কুকুর দেহ খুবলে খেয়ে নেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দম্পতিকে হেফাজতে নিয়ে গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি, হত্যার পেছনের আসল উদ্দেশ্য ও মানসিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শুধু বাঁকুড়া নয়, গোটা বাংলা হতবাক। মা-বাবা নিজেই যখন হত্যাকারী, তখন আর কে নিরাপদ?