২৬ জুলাই কারগিল বিজয় দিবসের মঞ্চ থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর চিফ জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী এক ঐতিহাসিক ঘোষণা করলেন। সেনার রূপান্তর ও আধুনিকীকরণের পথে এক নতুন পদক্ষেপ হিসেবে গঠিত হতে চলেছে ‘রুদ্র’ (Rudra Brigade) নামে একটি নতুন ‘অল-আর্মস ব্রিগেড’। এই ব্রিগেডে একত্রিত করা হচ্ছে সেনার সব ধরনের যুদ্ধ ইউনিট—ইনফ্যানট্রি, মেকানাইজড ইনফ্যানট্রি, বর্মযুক্ত রেজিমেন্ট, আর্টিলারি, স্পেশাল ফোর্স এবং আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেম (UAS)।
এই ব্রিগেডের লক্ষ্য—যেকোনও সীমান্ত-সংকটে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো এবং শত্রুকে কার্যত চমকে দেওয়া। দুইটি ইনফ্যানট্রি ব্রিগেড ইতিমধ্যেই ‘রুদ্র’ (Rudra Brigade) হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে এবং বিশেষভাবে প্রস্তুত লজিস্টিক এবং কমব্যাট সাপোর্টও পেয়েছে।
জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “আজকের ভারতীয় সেনা কেবল বর্তমান চ্যালেঞ্জ সামলাচ্ছে না, বরং একটি ট্রান্সফর্মেটিভ, আধুনিক ও ভবিষ্যতমুখী ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। ‘রুদ্র’ তারই বড় পদক্ষেপ (Rudra Brigade)।”
শুধু তাই নয়, সীমান্তে শত্রুকে তৎক্ষণাৎ ধ্বংস করতে গঠন করা হয়েছে ‘ভৈরব’ নামে একাধিক লাইট কম্যান্ডো ব্যাটেলিয়ন। প্রতিটি ইনফ্যানট্রি ব্যাটেলিয়নে এখন রয়েছে ড্রোন প্লাটুন, আর্টিলারি ইউনিটগুলিতে যুক্ত হয়েছে ‘দিব্যাস্ত্র ব্যাটারি’ ও লোটার মিউনিশন ব্যাটারি Rudra Brigade)।
তিনি জানান, ভারতের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং ক্রমাগত বৈরী সীমান্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সেনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকেও আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে—দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সাহায্যে।
এছাড়া সীমান্তে পরিকাঠামো নির্মাণ, রোড নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, এবং যুদ্ধ পর্যটন, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম ও হেরিটেজ ট্যুরিজমের দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
সেনাপ্রধান স্মরণ করিয়ে দেন, গত এপ্রিলের পহেলগাঁও হামলায় যখন ২৬ জন নিরীহ নাগরিক প্রাণ হারান, তার পাল্টা জবাব হিসেবে ভারত চালায় ‘অপারেশন সিন্দুর’। ৬-৭ মে রাতে ভারতীয় সেনা ৯টি উচ্চ-মূল্য সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে নিশানা করে সফল স্ট্রাইক করে পাকিস্তান এবং POK-তে।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এটি শুধু প্রতিশোধ ছিল না, একটি বার্তা ছিল—যারা সন্ত্রাস লালন-পালন করে, তারা আর রেহাই পাবে না।”
এর পর পাকিস্তান বাহিনী পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও, ভারত তা প্রতিহত করে তার অত্যাধুনিক S-400 ডিফেন্স সিস্টেম দিয়ে। এই সংঘর্ষ থামে ১০ মে, যখন দুই দেশ একটি সিজফায়ার চুক্তিতে পৌঁছয়।
শেষে জেনারেল দ্বিবেদী কারগিল যুদ্ধের শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ড্রাসে কারগিল ওয়ার মেমোরিয়ালে মাল্যদান করেন। তিনি বলেন, “এই বিজয় দিবসে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই সেই সব বীর সেনানীর পরিবারকে। তাঁদের সাহস ও আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা।”