আর মাত্র দুই দিন পর, ধর্মতলায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ঐতিহাসিক শহিদ দিবসের সমাবেশ। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই সভা রাজনৈতিকভাবে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আঁচ করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরাও। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের সমাবেশ থেকে কী বার্তা দেন, তা নিয়ে উৎসাহ তুঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে জমায়েতের সংখ্যা যে অনেক বেশি হবে, তা প্রায় নিশ্চিত (Kolkata Police)।
এদিকে, এই বিশাল সমাবেশের কারণে সাধারণ নাগরিকদের যেন কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়, সেই বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) নিয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। কলকাতার পুলিশ (Kolkata Police) কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, শহরে স্বাভাবিক যান চলাচল বজায় রাখতে কড়া নজরদারি থাকবে, সঙ্গে থাকবে প্রয়োজনে সাহায্যের জন্য তিনটি জরুরি ফোন নম্বরও।
২১ জুলাই সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট সাতটি বড় মিছিল ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা হবে। এই মিছিলগুলি শুরু হবে শ্যামবাজার, হেদুয়া, হাজরা, পার্ক সার্কাস, হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ ও কলকাতা স্টেশন এলাকা থেকে। এছাড়াও শহরের অন্তত ২২টি জায়গায় বড় জমায়েত হবে বলে পুলিশ (Kolkata Police) সূত্রে জানা গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে যেসব সমর্থক ও কর্মীরা আসবেন, তাঁদের গাড়ি কোথায় পার্ক করা হবে, তাও নির্ধারিত করা হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া শহর ও গ্রামীণ এলাকার গাড়িগুলি রাখা হবে বঙ্গবাসী কলেজ মাঠ, গঙ্গাসাগর মেলা মাঠ, পলাশী গেট রোড ও স্যান্ড রোড-সহ একাধিক জায়গায় (Kolkata Police)।
বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলি ও বর্ধমান জেলার গাড়িগুলি রাখা হবে মৌলালি থেকে মল্লিকবাজারের দিকে এজেসি বোস রোড এবং বিবি গাঙ্গুলি ক্রসিং পর্যন্ত সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ও সিআইটি রোডে। উত্তর কলকাতা ও ব্যারাকপুর থেকে আসা গাড়িগুলি রাখা হবে শহিদ মিনার ময়দান এবং আশেপাশের রাস্তায় (Kolkata police)।
হাওড়া থেকে আসা গাড়িগুলি পার্ক করা হবে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও বিধাননগর থেকে আগত গাড়িগুলিও একই ভাবে শহরের নির্দিষ্ট রুটে রাখা হবে। দক্ষিণ কলকাতার গাড়িগুলি রাখা হবে ময়দানের YMCA মাঠ, মেয়ো রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, আউটট্রাম রোড ও ডাফরিন রোডে (Kolkata police)।
সমাবেশে অংশ নিতে আসা হাজার হাজার মানুষের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে প্রায় ১৮টি অ্যাম্বুলেন্স। মিছিল নিয়ন্ত্রণে শহরের নানা গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে থাকছে বাঁশের গেট, টিনের ব্যারিকেড ও ভিউ কাটার। কিছু জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হতে পারে বলে খবর (Kolkata police)।
তৃণমূল কংগ্রেসের সভামঞ্চের আশেপাশে মোতায়েন করা হবে তিনটি কুইক রেসপন্স টিম। প্রতিটি মিছিলের শুরুর ও শেষ অংশে থাকবে পুলিশ বাহিনী এবং বড় মিছিলগুলিতে দায়িত্বে থাকবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার।
সভাস্থলের আশেপাশে গোটা এলাকা ভাগ করা হয়েছে ১৪টি জোনে, যার প্রতিটির দায়িত্বে থাকছেন IPS অফিসাররা। মেট্রো স্টেশনগুলিতেও মোতায়েন থাকবেন সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। ধর্মতলা ছাড়াও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকবেন পুলিশ অফিসার ইন চার্জ ও অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারদের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী (Kolkata police)।
কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শহরে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ কোনও সমস্যায় পড়লে যোগাযোগ করতে পারবেন ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে। এছাড়াও, হেল্পলাইনের জন্য তিনটি জরুরি নম্বর চালু করা হয়েছে— টোল ফ্রি নম্বর ১০৭৩, এবং দুটি মোবাইল নম্বর ৯৮৩০৮১১১১১ ও ৯৮৩০০১০০০০।
কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি থানা পেয়েছে নির্দিষ্ট দায়িত্ব। শহরের স্বাভাবিক যান চলাচল এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, তার জন্যই এই কঠোর নজরদারি ও পর্যবেক্ষণ।