পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের বিরুদ্ধে এবার আইনি চিঠি পাঠালেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ ও চিকিৎসক শান্তনু সেন (Santunu Sen)। তাঁর চিকিৎসা রেজিস্ট্রেশন দুই বছরের জন্য বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মেডিক্যাল কাউন্সিল, তা ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরও এখনও কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে সেই বাতিলাদেশ প্রদর্শিত হচ্ছে—এই অভিযোগ তুলে কড়া আইনি পদক্ষেপের পথে হাঁটলেন শান্তনু (Santunu Sen)।
শান্তনু সেন (Santunu Sen) দাবি করেছেন, হাইকোর্টের রায় ঘোষিত হওয়ার ১১ দিন কেটে গেলেও এখনো ওয়েবসাইটে তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া সাসপেনশনের আদেশ রয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “এটা কি আদালত অবমাননা নয়?” সেই সঙ্গে তিনি তাঁর আইনজীবীদের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও মুখ খুলেছেন শান্তনু, যেখানে তিনি কাউন্সিলের সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ এনেছেন।
শুরুটা হয়েছিল এক বিদেশি চিকিৎসা ডিগ্রি — ‘এফআরসিপি গ্লাসগো’ — অবৈধভাবে নামের সঙ্গে ব্যবহারের অভিযোগ থেকে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই শান্তনুর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল। বলা হয়, তিনি পরবর্তী দুই বছর আর ডাক্তারি করতে পারবেন না। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শান্তনু কলকাতা হাইকোর্টে যান এবং বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাস থেকে তাঁর পক্ষে রায় আসে ৭ জুলাই।
শান্তনুর দাবি, আদালতের রায় মেডিক্যাল কাউন্সিল ও তাদের সভাপতি সুদীপ্ত রায়কে আইনজীবীর মাধ্যমে জানানো হয়েছে। তিনিও ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তবুও প্রায় ২৫২ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে সেই পুরনো আদেশই রয়ে গেছে।
শান্তনুর বক্তব্য, “এটা শুধু প্রশাসনিক গাফিলতি নয়, ইচ্ছাকৃত আদালতের আদেশকে অগ্রাহ্য করার অপপ্রয়াস। এর পেছনে স্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।” তাঁর আইনজীবীরা এই বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শান্তনুর এই অভিযোগ সামনে আসতেই রাজ্যের চিকিৎসক মহলে এবং রাজনৈতিক মহলে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। একজন চিকিৎসক এবং প্রাক্তন সাংসদের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত তথ্য ওয়েবসাইটে ভুলভাবে প্রদর্শিত হওয়া কি আদতেই আদালত অবমাননার শামিল? উত্তর খুঁজছে প্রশাসন, আইনি মহলও।