পাকিস্তানের (Pakistan) রাজনীতিতে যুগের পর যুগ আধিপত্য বিস্তার করেছে শরিফ ও ভুট্টো পরিবার। কিন্তু আগামী ৫ আগস্ট, দৃশ্যপটে আসতে চলেছে আরেক “সন-রাইজ”—ইমরান খানের দুই ছেলে কাসিম খান (২৬) ও সুলাইমান ইসা খান (২৯) তাদের পিতার মুক্তির দাবিতে লাহোরে বিশাল বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিতে চলেছেন।
ইমরান খান (Pakistan) গত দুই বছর ধরে আদিয়ালা জেলে বন্দি। বহু মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর থেকে একঘরে করে রাখা হয়েছে তাকে। এমন সময় যখন সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের প্রভাব ক্রমশ বেড়ে চলেছে, এবং সেনা হস্তক্ষেপের আশঙ্কা ঘনিয়ে উঠছে, তখন এই প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনা চরমে (Pakistan)।
জীবনের অধিকাংশ সময় লন্ডনে কাটানো কাসিম ও সুলাইমান কখনওই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না (Pakistan)। কিন্তু সময়ের দাবি মেনে এবার তারা মাঠে নামছেন। স্রোত বদলেছে একটি টুইটার পোস্টকে কেন্দ্র করে, যা করেছেন ইমরানের প্রাক্তন স্ত্রী জেমাইমা গোল্ডস্মিথ (Pakistan)।
তিনি (Pakistan) অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তান সরকার ইমরানের দুই ছেলেকে তাদের বাবার সঙ্গে ফোনেও কথা বলতে দিচ্ছে না। এমনকি, তারা যদি পাকিস্তানে যান, তবে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। এই পোস্ট সামনে আসতেই পাকিস্তান তোলপাড়—PTI কর্মীরা আরও ক্ষিপ্ত, আর মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ জানিয়েছে ইমরানের দীর্ঘ নিঃসঙ্গ বন্দিত্ব নিয়ে।
এক সাক্ষাৎকারে, ইমরান (Pakistan) নিজেই বলেছিলেন, তাকে যেন এক ‘মৃত্যুকূপে’ বন্দি করে রাখা হয়েছে, ঠিক একজন সন্ত্রাসীর মতো। এখন, সেই নিঃশব্দতায় চিৎকার তুলতে চাইছেন তাঁর সন্তানরা।
কাসিম এক আবেগঘন বার্তায় বলেছেন, “আমাদের বাবা আমাদের সঙ্গে না থেকে পাকিস্তানের জন্য লড়েছেন। এখন, তিনি চান নিজের শেষ দিনগুলো আমাদের সঙ্গে কাটাতে—কিন্তু তিনি তা করছেন না। কারণ পাকিস্তান তার সবকিছু। তার ত্যাগ দেশের জন্য।”
এপ্রিল-মে মাসে প্রথমবারের মতো দুই ভাই জনসমক্ষে বাবা সম্পর্কে মুখ খুলেছিলেন। লন্ডন থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়ে তারা পাকিস্তান সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন। এমনকি নিউজিল্যান্ডে তারা একটি আনুষ্ঠানিক পিটিশনও জমা দিয়েছেন, যাতে ইমরান খানের মুক্তির জন্য দেশটি পাকিস্তানের ওপর চাপ প্রয়োগ করে।
লাহোরে আন্দোলনের প্রস্তুতি, সরকারে চরম উদ্বেগ
PTI-র ডাকে আগস্টে লাহোরে বিশাল বিক্ষোভের পরিকল্পনা সরকারকে রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছে। আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সরকার গঠন করেছে একটি নতুন আধাসামরিক বাহিনী—”ফেডারেল কনস্ট্যাবিউলারি”—যার দায়িত্ব অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে ওঠে, তবে গ্রেপ্তার এড়ানো যাবে না। “তারা যদি পাকিস্তানে এসে সহিংস আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়, তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রতীকী সফর নাকি রাজনৈতিক পা ফেলা?
ইমরানের (Pakistan) বোন আলীমা খান জানিয়েছেন, সুলাইমান ও কাসিম পাকিস্তানে আসবেন—গ্রেপ্তারের আশঙ্কা সত্ত্বেও। যদিও এটি একটি প্রতীকী পদক্ষেপ হতে পারে, কিন্তু এর মাধ্যমে PTI কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা হবে নিঃসন্দেহে।
তবে এখনো পর্যন্ত রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যোগদানের কোনো ঘোষণা আসেনি দুই ভাইয়ের পক্ষ থেকে (Pakistan)। তারা ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ায়, নির্বাচনে অংশ নিতে হলে আগে নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে।
কখনও ক্রিকেট মাঠে বাবার পাশে দেখা গেলেও, এবার রাজপথে নামতে চলেছে ইমরান খানের ছেলেরা। এই রাজনৈতিক ইনিংসের শুরুতেই তারা জাতিকে জানাতে চাইছে—বাবা শুধু তাদের নয়, পাকিস্তানেরও।