রাজস্থানে (Rajasthan) এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে ঘটা বর্বর ও পৈশাচিক ঘটনার জেরে সারা দেশজুড়ে নেমে এসেছে স্তব্ধতা ও ক্ষোভ। আলওয়ার জেলার পানিয়ালা রোডের কাছে এক চলন্ত বোলেরো (Rajasthan) গাড়িতে তাঁকে অপহরণ করে ১১ দিন ধরে লাগাতার গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এই দীর্ঘ সময়ে তাঁকে আটকে রেখে তাঁর উপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। মুখে কাপড় গুঁজে, হাত-পা বেঁধে, বন্দুক দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে চলে ধর্ষণের বিভীষিকা (Rajasthan)।
ঘটনার সূত্রপাত ২৪ এপ্রিল রাতে, যখন ওই মহিলা তাঁর ঘর থেকে বেরিয়ে মলত্যাগ করতে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময় একটি বোলেরো গাড়ি এসে দাঁড়ায়। গাড়িতে থাকা তিন ব্যক্তি তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। কিছুদূর যাওয়ার পর গাড়ি থামিয়ে আরও চারজন অভিযুক্ত গাড়িতে ওঠে (Rajasthan)। এরপর তাঁকে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
মহিলার বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁকে একটানা আটকে রেখে ভিডিও রেকর্ডিংও করা হয়, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। মুখ খুললে হত্যা করা হবে—এই ভয় দেখিয়ে তাঁর উপর চলে নির্যাতনের পর নির্যাতন। এই ঘটনার ১১ দিন পর, নিঃসীম অসুস্থতা ও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাঁকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে যায় দুষ্কৃতীরা (Rajasthan)। সেখান থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় উদ্ধার করে তাঁকে বাড়িতে পৌঁছনো সম্ভব হয়।
প্রথমে ভয়ে পরিবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়নি। পরবর্তীতে সাহস করে থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ ওঠে। মহিলা ও তাঁর পরিবারের দাবি, পুলিশের তরফে শুরুতে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। একাধিকবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ নির্লিপ্ত থাকে। শেষপর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। আদালতের নির্দেশে ২ জুন বাগাদ তিরায়া থানায় মামলা দায়ের হয়।
অভিযোগকারিণীর স্বামী বলেন, “আমার স্ত্রীকে ১১ দিন ধরে অমানবিকভাবে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমরা আদালতে না গেলে হয়তো আজও থানায় মামলা হত না। আমাদের চুপ করিয়ে দিতে ৩ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, রাজি না হওয়ায় ফের হুমকি দেওয়া হয়। এখন আমরা নিজের জীবন নিয়েও শঙ্কিত।”
এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব রামগড়ের ডিএসপি সুনীল কুমার শর্মাকে দেওয়া হয়েছে। আলওয়ার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তেজপাল সিং জানান, মহিলার চিকিৎসা ও ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জবানবন্দির প্রক্রিয়া শুরু হবে। অভিযুক্তরা পলাতক হলেও দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এত বড় এক ঘটনার পরেও এখনো পর্যন্ত একজনকেও গ্রেপ্তার না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
এই ঘটনার নিষ্ঠুরতা শুধু মানবতাকেই কালিমালিপ্ত করেনি, বরং আবারও তুলে দিয়েছে সেই চেনা প্রশ্ন—ভারতের নারীরা আজও কতটা সুরক্ষিত?