ওড়িশার (Odisha) নির্যাতিতার তিন দিনের জীবন-মৃত্যুর লড়াই শেষ হল করুণ পরিণতিতে। সোমবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ভুবনেশ্বরের এমস হাসপাতালে মৃত্যু হল সেই তরুণীর, যিনি যৌন হেনস্থার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ওই দিনই হাসপাতালে (Odisha) গিয়ে দেখা করেন তাঁর সঙ্গে। ironically, সেদিন রাতেই থেমে গেল তরুণীর শেষ নিঃশ্বাস।
হাসপাতাল (Odisha) সূত্রে খবর, তরুণীকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছিল চিকিৎসকদের তরফে। তাঁর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কিডনি প্রতিস্থাপনসহ একাধিক চেষ্টায় আশার আলো দেখাতে চেয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো গেল না (Odisha)।
ঘটনার সূত্রপাত ১ জুলাই, যখন নির্যাতিতা কলেজের (Odisha) অভ্যন্তরীণ অভিযোগগ্রহণ কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন নিজের বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, মাসের পর মাস ধরে সেই অধ্যাপক যৌন হেনস্থা করে আসছিলেন তাঁকে। স্পষ্ট ভাষায় নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন ওই অভিযোগপত্রে (Odisha)। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগের গুরুত্ব বুঝতে ব্যর্থ হয়। উচ্চপদস্থ অধ্যাপককে আঘাত না লাগুক, সেই চেষ্টাতেই চুপ করে বসে থাকে কর্তৃপক্ষ। বরং নির্যাতিতার অভিযোগকে অগ্রাহ্য করা হয় (Odisha)।
এই ন্যায্য দাবির প্রতি অবিচার সহ্য করতে না পেরে সহপাঠীদের সঙ্গে বিক্ষোভ শুরু করেন নির্যাতিতা। প্রতিবাদের পথ বেছে নেন। কিন্তু সমাজ যদি অন্ধ হয়ে থাকে, তবে সজাগ চোখ কীই বা করতে পারে? প্রতিবাদে সাড়া মেলেনি। শনিবার, কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে হতাশা নিয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। তারপরই ক্যাম্পাসেই নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন তরুণী। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হন আরেক ছাত্র।
দু’জনকে তড়িঘড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তরুণীর অবস্থা এতটাই আশঙ্কাজনক ছিল যে, চিকিৎসকদের মতে প্রথম থেকেই বাঁচার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ ছিল। তাই তাঁকে দ্রুত ভুবনেশ্বরের এমস-এ স্থানান্তর করা হয়। তিন দিন ধরে সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালিয়েও শেষরক্ষা হল না।
এখানেই থেমে যায় না প্রশ্ন। যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে মুখ খোলা কি এ দেশে এখনও এতটা কঠিন? অভিযোগ জানালেও যদি ন্যায় না মেলে, যদি নিজের শরীরে আগুন লাগিয়েও সমাজ জাগে না—তবে কি সত্যিই কোনো পরিবর্তন আসবে? ওড়িশার তরুণীর মৃত্যু যেন আরও একবার আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, “প্রতিবাদের মৃত্যুও হয়।”