টেবিল টেনিস কোর্টে যে মেয়ে দেশের গর্ব হয়ে উঠছিল, সেই রাধিকা যাদব (Radhika Yadav) আজ আর নেই। কারণ, তাঁকে খুন করেছেন তাঁরই বাবা দীপক যাদব। প্রথমে এই ঘটনার নেপথ্যে আর্থিক দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিয়েছিল পুলিশ। বাবার অভিযোগ ছিল—মেয়ের উপার্জনে খেতে হচ্ছে, এই খোঁটা সহ্য করতে পারেননি তিনি। কিন্তু এবার সামনে এল একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য (Radhika Yadav)।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে এসেছে এক ভিডিয়ো বার্তা, যেখানে মুখ খুলেছেন রাধিকার (Radhika Yadav) ঘনিষ্ঠ বান্ধবী হিমাংশিকা সিং রাজপুত। তিনিও একজন টেবিল টেনিস খেলোয়াড়। ভিডিয়োতে হিমাংশিকা বলেছেন—”আমার বেস্ট ফ্রেন্ড রাধিকাকে ওর বাবা খুন করেছে। ৫ বার গুলি চালান, যার মধ্যে চারটি বুলেট সরাসরি ওঁর শরীরে লাগে।”
হিমাংশিকার কথায় উঠে এসেছে আরও ভয়ঙ্কর চিত্র—রাধিকার (Radhika Yadav) জীবন নিয়ন্ত্রণ করতেন তাঁর বাবা। কী পোশাক পরবে, কাদের সঙ্গে মেলামেশা করবে, কখন কী করবে—সবকিছুতেই ছিল বাধা। নিজের মত করে কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারত না রাধিকা। পরিবার তাঁর শর্টস পড়া বা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা পর্যন্ত মেনে নিতে পারত না। এমনকী ভিডিও কলেও কার সঙ্গে কথা বলছে, তা পর্যন্ত দেখাতে হত তাঁকে।
বন্ধু জানান, রাধিকা (Radhika Yadav) সব সময় চুপচাপ থাকত। তাঁকে কখনও পরিবারের বাইরে অন্য কারও সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে দেখা যেত না। নিজের প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য তাঁকে পরিবারের কাছে জবাবদিহি করতে হত। মাত্র ৫০ মিটার দূরে টেনিস অ্যাকাডেমি, তাও সেখানে পৌঁছাতে দেরি করলে সমস্যা হত। ছবি তোলা, ভিডিয়ো বানানো ছিল রাধিকার ভাল লাগা—তাও বন্ধ করে দিয়েছিল পরিবার (Radhika Yadav)।
এই ঘটনার পর চাঞ্চল্য আরও বাড়িয়েছে একটি জল্পনা। সূত্রের খবর, রাধিকা নাকি অন্য ধর্ম বা জাতের এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। সেই সম্পর্কের রোষেই কি তাঁকে গুলি করে হত্যা করলেন বাবা? এই প্রশ্নে উত্তাল গোটা দেশ। পুলিশও বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে।
একটা উঠতি প্রতিভা, যে খেলাধুলার জগতে নিজের জায়গা তৈরি করছিল, তার স্বাধীনতার শ্বাসরোধ করে দেওয়া হল নিজের ঘরেই। শুধুই ‘মেয়ের উপার্জনে খেতে হচ্ছে’ শুনে একজন বাবা কি এমন নৃশংস হতে পারেন? নাকি এর পেছনে আছে আরও গভীর অসহিষ্ণুতা, জেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও গোঁড়ামি?