অস্ট্রেলিয়ায় (Australia) গাড়ি দুর্ঘটনায় এক নারীর মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক ভূপিন্দর সিংহকে পাঁচ বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দিল আদালত। গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কারাগারে শিখ ধর্ম পালনে অসুবিধা হচ্ছে বলে ক্ষমা চাওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে বিচারক জানিয়েছেন, এই অজুহাতে কারাবাসের পরিবর্তে হোম ডিটেনশন দেওয়া যাবে না (Australia)।
২৪ বছর বয়সী ভূপিন্দর সিংহ ২০২৩ সালের মার্চে অ্যাডিলেডের উইনসর গার্ডেনস এলাকায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটান (Australia)। তিনি তখন ১৬১ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিতে বন্ধুদের ফোর্ড মাস্ট্যাং চালাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে ক্রিস্টিন স্যান্ডফোর্ড নামের এক মহিলার গাড়িকে সজোরে ধাক্কা মারেন তিনি। ধাক্কায় ক্রিস্টিনের গাড়ি প্রায় ৩০ মিটার ছিটকে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার (Australia)। তিনি তখন কেবল রান্নার তেল কিনতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। ক্রিস্টিন ছিলেন দুই সন্তানের মা।
ভূপিন্দর সিংহ আগে থেকেই বিপজ্জনক গাড়ি চালনার দায় স্বীকার করেছিলেন এবং আদালতে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তার আইনজীবীরা দাবি করেন, দুর্ঘটনার পর তিনি কোনও সাহায্য করতে পারেননি কারণ ধাক্কার সময় তার পাগড়ি খুলে যায়—যা একজন শিখ ব্যক্তির জন্য জনসমক্ষে নগ্ন হওয়ার সমান। তারা আরও বলেন, কারাগারে সঠিকভাবে চুল ধোয়া ও শুকোনোর সুযোগ নেই, নিরামিষ খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে ভূপিন্দরের ওজন ইতিমধ্যেই ৯ কেজি কমে গেছে।
তবে বিচারক মুসকাট এসব যুক্তিকে গুরুত্ব দেননি (Australia)। তিনি রায়ে বলেন, “আপনি নিজের ইচ্ছেতেই গাড়ির গতি বাড়িয়েছিলেন। এই মৃত্যুর জন্য আপনি সম্পূর্ণ দায়ী।” তিনি আরও বলেন, “ক্রিস্টিন স্যান্ডফোর্ডের মৃত্যু পুরোপুরি এড়ানো যেত যদি আপনি নিয়ম মেনে গাড়ি চালাতেন। এই দুর্ঘটনা ‘স্পিড কিলস’ কথাটার সবচেয়ে নির্মম বাস্তব রূপ।”
রায় অনুযায়ী, ভূপিন্দর সিংহের (Australia) সাজা পাঁচ বছর, দুই মাস ও ২১ দিন। তিনি প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার উপযুক্ত হবেন ২০২৯ সালে। একইসঙ্গে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে ১৫ বছরের জন্য।
এই ঘটনাটি অস্ট্রেলিয়ার আদালতে ধর্মীয় অসুবিধা ও পথ নিরাপত্তা নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ নজির হিসেবে উঠে এসেছে। একজন শিখ ধর্মাবলম্বী হিসেবে ভূপিন্দরের বিশ্বাসকে সম্মান জানানো হলেও, তা কোনওভাবেই একজন নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুতে ছাড় পাওয়ার কারণ হতে পারে না—বিচারকের এই মন্তব্য এখন সারা অস্ট্রেলিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রে।