হিমাচল (Himachal) প্রদেশের মান্ডি জেলার সেরাজ ভ্যালির পাহাড়ি গ্রাম পারওয়াডায় ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ট্র্যাজেডি। ১১ মাসের ছোট্ট শিশু নিকিতা এক রাতেই হারিয়ে ফেলেছে তার গোটা পরিবার—মা, বাবা এবং ঠাকুমা। ৩০ জুন রাতের ভয়াবহ ফ্ল্যাশ ফ্লাডের (Himachal) সময় নিকিতা ঘুমাচ্ছিল বাড়ির ভেতরে, আর ঠিক তখনই তার পরিবার পাশের নালার জল বাড়ছে কিনা দেখতে বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরে আর আসা হলো না।
হঠাৎ ধেয়ে আসা প্রবল জলস্রোতে তলিয়ে যান তিনজনেই (Himachal) । সেই রাতে একাই ঘুমিয়ে থাকা নিকিতা অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যায়। এখনও পর্যন্ত কেবল তার বাবার, রমেশ কুমারের মৃতদেহ উদ্ধার করা গেছে (Himachal) । মায়ের ও ঠাকুমার খোঁজে এখনও চলছে তল্লাশি, ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গেছে দশদিন।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সারা দেশ থেকে সহানুভূতির ঢল নামে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ওঠে ‘অসহায় শিশু নিকিতা’-র কাহিনি (Himachal) । শত শত মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন—কেউ দত্তক নিতে চান, কেউ আর্থিক সাহায্য দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তবে এরই মধ্যে নিকিতার পিসি (Himachal) , তারা দেবী সামনে এগিয়ে এসে জানান, তিনি নিকিতাকে নিজের সন্তান হিসেবে মানুষ করবেন। বাল সাব ডিভিশন ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) স্মৃতিকা নেগি জানান, “তারা দেবী দত্তকের প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। তিনি নিজেই শিশুটিকে নিজের ঘরে রাখতে ও মানুষ করতে চান (Himachal) ।”
প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে নিকিতার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে। তার নামে একটি আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ২৫,০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা জমা হয়েছে। আরও সাহায্য এবং সরকারি ক্ষতিপূরণ আসবে পরবর্তীতে। এই ফান্ডের সমস্ত অর্থ নিকিতা প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছর) হওয়ার আগে পর্যন্ত লক থাকবে, এবং ততদিন তা জেলা শিশু সুরক্ষা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত থাকবে।
এসডিএম স্মৃতিকা নেগি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত ১৫০-র বেশি মানুষ এগিয়ে এসেছেন নিকিতাকে সাহায্য করতে—কেউ টাকা পাঠাচ্ছেন, কেউ তাকে নিজেদের ঘরে নিতে চাইছেন। তবে পরিবার স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা কেবল সাহায্য চান, নিকিতাকে দত্তক দিতে চান না।”
এই ঘটনায় গোটা এলাকা, এমনকি গোটা দেশ স্তব্ধ। একটি অবুঝ মুখে এখনও ফুটেনি মায়ের ডাক, অথচ তার কপালে লিখে গেছে এক নির্জন, অথচ লড়াকু ভবিষ্যৎ। আর সেই ভবিষ্যতের জন্য এগিয়ে এসেছে তার আপনজন এবং অগণিত হৃদয়।