চীনের ব্রহ্মপুত্র নদী (তিব্বতে যার নাম ইয়ারলুং স্যাংপো) উপর নির্মিত হতে চলা বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে “জলবোমা” (Water Bomb) হিসেবে অভিহিত করলেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু। তিনি বলছেন, এই বাঁধ শুধু ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য নয়, সমগ্র জাতিগোষ্ঠী ও জীবিকার জন্য এক ভয়ঙ্কর অস্তিত্ব সংকট তৈরি করতে পারে (Water Bomb)।
সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেমা খাণ্ডু বলেন, “চীনকে কোনওভাবেই ভরসা করা যায় না। তারা কখন কী করবে, কেউ জানে না।” তিনি বলেন, “চীনের সামরিক হুমকি একদিকে থাক, কিন্তু এই ড্যাম প্রকল্প (Water Bomb) আমাদের জন্য আরও বড় বিপদ হয়ে দাঁড়াবে। এটা একপ্রকার ‘ওয়াটার বোম’—যা তারা প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে।”
এই হাইড্রো প্রোজেক্টের মাধ্যমে ৬০,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছে চীন (Water Bomb)। ২০২৪ সালে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩৭ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়, যার মেয়াদ পাঁচ বছর। কিন্তু এই বাঁধ নির্মাণ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ অনেক গভীর। মুখ্যমন্ত্রী খাণ্ডু স্পষ্ট জানান, চীন আন্তর্জাতিক জলবণ্টন চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী নয়। ফলে তাদের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই যাতে তারা ভারতের সীমানায় প্রবাহিত নদীগুলিতে নির্দিষ্ট হারে জল ছাড়বে (Water Bomb)।
তিনি বলেন, “যদি চীন এই প্রকল্পের মাধ্যমে অতিরিক্ত জল হঠাৎ ছেড়ে দেয়, তাহলে আমাদের সিয়াং উপত্যকা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। বিশেষ করে আদি জনজাতি ও পার্শ্ববর্তী সম্প্রদায়দের জমি, ঘরবাড়ি এবং মানুষের জীবন-জীবিকা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
খাণ্ডু আরও বলেন, “যদি চীন আন্তর্জাতিক নিয়ম মানত, তাহলে এই প্রকল্প অনেক ক্ষেত্রেই ভারতের উপকারে আসত। বর্ষাকালে যে ভয়ঙ্কর বন্যা অরুণাচল, আসাম এবং বাংলাদেশের নিচু এলাকায় দেখা যায়, তা অনেকাংশেই এড়ানো যেত।” কিন্তু চীন সেই চুক্তিতে নেই, আর সেখানেই সবচেয়ে বড় সমস্যার শিকড়।
এই ড্যাম প্রকল্পের ঘোষণা ২০২১ সালে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং-এর সীমান্ত সফরের পরেই আসে। আর এখন সেটি কার্যকরভাবে নির্মাণে এগোচ্ছে চীন, যা ভারতের জন্য এক চরম ভূরাজনৈতিক ও পরিবেশগত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।