বর্ধমানের মেমারি থেকে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। একেবারে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভারতের সুরক্ষা ভেদ করতে চাইছিল পাকিস্তান (Pakistani Spy)। আর সেই প্রচেষ্টায় পা দিয়েছিল বাংলার দুই যুবক। ফেসবুকে বন্ধুত্ব, তার পর ধাপে ধাপে বিশ্বাস… এবং শেষপর্যন্ত সরাসরি ভারতীয় নম্বর হাতে তুলে দেওয়া পাক চরদের হাতে!
স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF) সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দুই যুবকের নাম মুকেশ রজক ও রাকেশ কুমার গুপ্ত। দু’জনেই পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা (Pakistani Spy)। এই দুই ব্যক্তি ফেসবুকে এক পাকিস্তানি ‘ভুয়ো প্রোফাইল’-এর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। কথায় কথায় বন্ধুত্ব ক্রমে এমন গভীরতায় পৌঁছায় যে, সেই ভুয়ো আইডির পাকিস্তানি ব্যক্তি একদিন সরাসরি চেয়ে বসে একটি ভারতীয় হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর।
সন্দেহ না করে মেমারির ওই দুই যুবক নিজেদের ফোন নম্বর দিয়ে দেয় ‘বন্ধু’কে (Pakistani Spy)। কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি পাক গুপ্তচর। এরপর OTP চাইলে সেটিও পাঠিয়ে দেয় যুবকরা। সেই OTP দিয়েই সেই নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে নেয় পাকিস্তানের ওই গোয়েন্দা অফিসার (Pakistani Spy)।
তবে ঘটনাটি বেশিদিন গোপন থাকেনি। বিষয়টি নজরে আসে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের। তৎক্ষণাৎ অভিযান চালিয়ে বর্ধমান থেকে ওই দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একাধিক মোবাইল ফোন ও প্রযুক্তিগত ডিভাইস। তদন্তকারীদের ধারণা, ফেসবুকে যিনি ‘বন্ধু’ সেজেছিলেন, তিনি আদতে পাকিস্তানের কোনও গুপ্তচর সংস্থার ইন্টেলিজেন্স অফিসার।
ধৃত দুই যুবককে আপাতত সাতদিনের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। STF সূত্রে জানানো হয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও গভীরে গিয়ে চক্রান্তের মূল চক্রধারাদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরগুলির উপর পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের এত আগ্রহের মূল কারণ হল, এই নম্বর ব্যবহার করে সেনা ও সরকারি আধিকারিকদের কাছে পৌঁছনোর রাস্তা তৈরি করা যায়। ‘হানি ট্র্যাপ’-এর মাধ্যমে মেসেজ বা ফোন করে তথ্য জোগাড় করার চেষ্টা করা হয়।
এই ঘটনার পর একবার আবার প্রমাণ হয়ে গেল—সামান্য অসতর্কতা কিভাবে গোটা দেশের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করতে পারে।