দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজে ছাত্রী ধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের (Monojit Mishra) বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিল। বুধবার, ৩ জুলাই বার কাউন্সিল ঘোষণা করে যে, মনোজিৎ মিশ্রের (Monojit Mishra) আইনজীবী হিসেবে লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের কোনো আদালতেই আর তিনি কোনো মামলায় সওয়াল করতে পারবেন না।
এই সিদ্ধান্ত আসে অভিযোগপত্র জমার সাত দিনের মাথায়। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্যজুড়ে (Monojit Mishra) । বিশেষ করে এক আইন কলেজের ছাত্রী ধর্ষণের মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি (Monojit Mishra) নিজে আইনজীবী হন, তাহলে জনমনে প্রশ্ন উঠবেই।
পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিল ২ জুলাই এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়, মনোজিৎ মিশ্রের নাম আইনজীবীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে এবং সেই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় বার কাউন্সিলের কাছেও জানানো হবে। এর ফলে তিনি কোনো আদালতে আর কোনো মামলা লড়তে পারবেন না।
এই চাঞ্চল্যকর কাণ্ডে ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ, যার মধ্যে মনোজিৎ মিশ্র অন্যতম। ঘটনার তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (SIT), যাদের সহযোগিতা করছে ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট। পরবর্তীকালে গোটা মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টকে।
মনোজিৎ মিশ্রের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, তিনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন এবং আলিপুর আদালতে দীর্ঘদিন ধরে আইনজীবী হিসেবে কাজ করছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বার কাউন্সিলের কড়া সিদ্ধান্তকে দেখা হচ্ছে আইনি অনুশাসনের পক্ষে এক দৃঢ় পদক্ষেপ হিসেবে।
এই ঘটনার জেরে দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের গভর্নিং বডিও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মঙ্গলবার কলেজ কর্তৃপক্ষ মনোজিৎ মিশ্রকে কলেজের অস্থায়ী পদ থেকে বহিষ্কার করে এবং অভিযুক্ত দুই ছাত্র-ছাত্রীকেও কলেজ থেকে বহিষ্কার করে।
এই ঘটনা ফের একবার সামনে এনেছে শিক্ষাঙ্গনে লুকিয়ে থাকা ক্ষমতার অপব্যবহার ও যৌন হেনস্থার ভয়াবহতা। তবে, প্রশাসন ও বার কাউন্সিলের কঠোর পদক্ষেপে সমাজে স্পষ্ট বার্তা পৌঁছেছে—যে-ই হোক না কেন, অপরাধ করলে রেহাই নেই।