রাজারঘুবংশী হানিমুন হত্যা (Meghalaya murder) মামলায় নতুন মোড়! মৃতের বোন শ্রষ্টি রঘুবংশীর বিরুদ্ধে এবার খুনের মামলা দায়ের করল গুয়াহাটি পুলিশ। হানিমুনে গিয়ে স্বামীর রহস্যমৃত্যু এবং স্ত্রীর আত্মসমর্পণের পর, এবার ভাইয়ের বিচার চাইতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া শ্রষ্টিকেই কাঠগড়ায় তুলল আইন (Meghalaya murder)।
গুয়াহাটি পুলিশের পক্ষ থেকে (Meghalaya murder) জানানো হয়েছে, শ্রষ্টির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির পরিবর্তিত সংস্করণ ‘ভারতীয় ন্যায় সঞ্জিতা’ (Bharatiya Nyaya Sanhita বা BNS)-র ৩০২ ধারায় খুনের মামলা দায়ের হয়েছে, সঙ্গে ১৯৬(২) এবং ২৯৯ ধারাও। পুলিশ জানিয়েছে, শ্রষ্টির একাধিক ইনস্টাগ্রাম রিল এবং পোস্টে উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক রং মিশে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে (Meghalaya murder), যা জনমনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
এই মামলা সামনে আসার পর দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ভাইয়ের মৃত্যুকে ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকা শ্রষ্টি সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক আবেগপ্রবণ পোস্ট ও ভিডিও করেন। তাতে তিনি দাবি করেন, “সোনম আমার ভাইকে বলি দিয়েছে।” সোনম রঘুবংশীই হলেন রাজার স্ত্রী এবং এই মামলার মূল অভিযুক্ত। পুলিশের দাবি, এই পোস্টগুলির ভাষা এমন ছিল যা সাম্প্রদায়িক সহিষ্ণুতায় প্রভাব ফেলতে পারত।
যা আরও বিতর্ক ছড়িয়েছে, তা হল শ্রষ্টির ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল। প্রোফাইলে প্রায় ৩.৯৪ লক্ষ ফলোয়ার থাকা শ্রষ্টি ভাইয়ের মৃত্যুর পর কিছু ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে তিনি কখনও সোনমের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন, তো কখনও এক মোবাইল স্টোরের প্রচার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বিশেষ করে রাজা রঘুবংশীর দেহ উদ্ধারের আগের দিন একটি ভিডিওতে শ্রষ্টিকে মোবাইল দোকানের বিজ্ঞাপন দিতে দেখা যায়—যা মুহূর্তে নেটিজেনদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। অনেকে অভিযোগ করেন, তিনি “ট্র্যাজেডি মার্কেটিং”-এর আশ্রয় নিচ্ছেন এবং ভাইয়ের মৃত্যুকে ভাইরাল কনটেন্টে পরিণত করছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন প্রশ্ন উঠেছে—বিচারের দাবি আর পাবলিসিটির লাইন কোথায় মিলে যাচ্ছে? সোশ্যাল মিডিয়ায় কি আইনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে?
গুয়াহাটি পুলিশ ইতিমধ্যেই শ্রষ্টিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠিয়েছে। যদিও রঘুবংশী পরিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাঁদের উদ্দেশ্য কখনওই কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা ছিল না। তাঁরা ক্ষমাপ্রার্থী এবং বলেছেন, “বিষাদ ও শোকের কারণেই এই পোস্টগুলি করা হয়েছিল, বিচার পাওয়ার আকুতি থেকেই।”
মে মাসে বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই সোনম ও রাজা হানিমুনে যান মেঘালয়ের শিলংয়ে। ২৩ মে তাঁরা নঙরিয়াট গ্রামের একটি হোমস্টে থেকে চেক আউট করেন, তারপর থেকেই নিখোঁজ। অবশেষে ২ জুন রাজার দেহ উদ্ধার হয় ওয়েসাউডং জলপ্রপাতের পাশে এক খাদ থেকে। সোনম পরে উত্তরপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়, তিনজন সহ-অভিযুক্ত সহ। পুলিশ জানায়, এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত।
এই মুহূর্তে গোটা দেশজুড়ে বিতর্ক তুঙ্গে—সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচার চাওয়ার সীমা কোথায়? আবেগের নামে যদি কারও পোস্ট জনমনে ঘৃণা ছড়ায়, তার দায়ভার কি থাকবে না?