রাজস্থানের বারোমার (Barmer) শিব থানার অন্তর্গত উদু গ্রামে ঘটল এক ভয়াবহ এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা (Rajasthan)। পরিবারিক কলহের জেরে একই পরিবারের চারজন সদস্য একসঙ্গে আত্মহত্যা করলেন। যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁরা হলেন শিবলাল গৌর (৩৫), তাঁর স্ত্রী কবিতা (৩২), এবং তাঁদের দুই নাবালক পুত্র বজরং (৯) ও রামদেব (৮)। তাঁদের মৃতদেহগুলি বাড়ির (Rajasthan) পাশেই একটি জলের ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পিছনে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ। পুলিশের (Rajasthan) প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, শিবলালের সঙ্গে তাঁর ছোট ভাই মঙ্গিলালের দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল একটি বাড়ি নিয়ে—যেটি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে নির্মিত হয়েছিল। বাড়ির মালিকানা (Rajasthan) নিয়ে সেই সংঘাত এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, অবশেষে গোটা পরিবার চরম পদক্ষেপ নেয়।
ঘটনার পর আরও যেটি সবাইকে শিউরে তুলেছে, তা হল একটি ভয়ঙ্কর রিল ভিডিও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে যাওয়া এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে—মা কবিতা তাঁর ছোট ছেলে রামদেবকে কনের সাজে সাজিয়ে দিচ্ছেন। মনে করা হচ্ছে, আত্মহত্যার ঠিক আগে এই ভিডিওটি রেকর্ড করা হয়। শিশুর কপালে সিঁদুর, মুখে লাজুক হাসি—এই করুণ দৃশ্য যেন ভয়াবহ পরিণতির ইঙ্গিত ছিল আগেই (Rajasthan)।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। হাতে লেখা সেই চিঠিতে পরিবার লিখেছে, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক অশান্তি তাঁদের এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। চিঠিতে আরও একটি অনুরোধ ছিল—তাঁদের শেষকৃত্য যেন বাড়ির সামনেই করা হয়।
শিবলাল গৌর পেশায় ছিলেন একজন স্টিল ফার্নিচার কর্মী এবং দীর্ঘদিন জয়পুরে কাজ করার পর সম্প্রতি গ্রামে ফিরেছিলেন। তিনি একটি খামারবাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছিলেন, যেখানে তাঁর ভাই মঙ্গিলালও কাছাকাছি থাকতেন। তাঁদের মা বর্তমানে বারমের শহরে মঙ্গিলালের সঙ্গেই থাকেন এবং বাবা, যিনি একজন জ্যোতিষী, ঘটনার সময় অন্য গ্রামে ছিলেন বলে জানা গেছে।
গাঁয়ের মানুষদের কাছ থেকে খবর পেয়ে প্রথমে ছুটে আসে ভিয়াড় আউটপোস্টের পুলিশ। এরপর শিব থানার অফিসার সত্যপ্রকাশ বিষ্ণোই, CO রামসার মানা রাম গর্গ এবং ASP জসা রাম বস-সহ একাধিক শীর্ষ আধিকারিক ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির একটি দলকেও ডাকা হয়, যারা ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করে।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি শুধু ওই গ্রাম নয়, গোটা রাজস্থান জুড়েই চরম শোক এবং ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।