দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজের ছাত্রী ধর্ষণকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রর (Kasba Case) বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল। এবার এক সহপাঠী ছাত্র জানালেন, শুধু যৌন হেনস্থা বা ধর্ষণই নয়, কলেজের ভিতরে দীর্ঘদিন ধরেই এক ভয়ানক সন্ত্রাস চালিয়ে আসছিলেন মনোজিৎ (Kasba Case)। মানসিক নির্যাতন, শারীরিক হামলা, অপহরণ এবং প্রাণনাশের হুমকি— সবকিছুই চলত প্রকাশ্যে। অথচ এতদিন কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি, কারণ প্রতিবাদ করলেই নেমে আসত ভয়ানক অত্যাচার।
অভিযোগকারী ওই ছাত্র জানিয়েছেন (Kasba Case), “যেই কেউ প্রাক্তন ছাত্রদের বিরুদ্ধে কথা বলত, তাকে শুরুতে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো। কেউ তাতে ভয় না পেলে, এরপর তার উপর শারীরিক হামলা নামিয়ে আনা হতো।”
তিনি আরও দাবি করেন, তাঁর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে মনোজিতের(Kasba Case) লোকজন অপহরণ করেছিল। কিছুক্ষণ পর সেই বন্ধু রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন। “আমরা ক্লাস থেকে বেরোচ্ছিলাম, তখনই তার গুণ্ডারা এসে আমার বন্ধুকে কিডন্যাপ করার চেষ্টা করে। আমাদের উপরও হামলা চালায়। পরের দিন আমার বন্ধুকে এক জায়গায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়,”— জানিয়েছেন ওই ছাত্র।
এই ছাত্রের আরও অভিযোগ, মনোজিৎ এবং তার লোকজন কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, কেউ মুখ খুললে বা আর কেউ এই ঘটনার কথা জানালে, পরের বার সরাসরি খুন করে দেওয়া হবে। “আমার বন্ধুর গায়ে ব্লেড চালানো হয়েছিল, লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছিল। সেই ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করে আমাদের ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল। মানসিকভাবে আমরা চূর্ণ হয়ে গিয়েছিলাম,”— বলেন তিনি।
এই নির্যাতনের ভয় এতটাই তীব্র ছিল যে, অভিযোগকারী ছাত্র এবং তাঁর বন্ধু গত ১০ মাস ধরে কলেজেই যাননি। প্রতিনিয়ত তাঁরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২৮ জুন দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মনোজিৎ মিশ্র এবং আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, মনোজিৎ আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছিলেন, এমনকী বিয়ের প্রস্তাবও দেন। ছাত্রী তা প্রত্যাখ্যান করতেই তাঁকে ধর্ষণ করেন মনোজিৎ, যখন বাকি দুই অভিযুক্ত নির্লিপ্ত দর্শকের ভূমিকা নেয়।
এই নতুন অভিযোগে মনোজিৎ মিশ্রর বিরুদ্ধে আরও একাধিক ধারায় মামলা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযুক্তর ক্ষমতার দাপট এবং কলেজ চত্বরে সৃষ্ট ত্রাসের বিরুদ্ধে এবার একাধিক ছাত্র মুখ খুলতে শুরু করেছেন।