চার বছর আগে বিধানসভা ভোট-পরবর্তী হিংসার সময় ঘটে গিয়েছিল এক মর্মান্তিক অপরাধ— মালদহ (Maldah) জেলার মানিকচকে এক ৯ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করেছিলেন এলাকার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক। সেই ঘটনায় অবশেষে ন্যায়বিচার পেল নির্যাতিত পরিবার। রাজ্যে হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট-পরবর্তী হিংসার জেরে সিবিআইয়ের হাতে থাকা ৫৫টি মামলার মধ্যে এই প্রথম কোনও পকসো মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন অভিযুক্ত (Maldah) ।
মালদহ (Maldah) অতিরিক্ত নগর দায়রা আদালতের দ্বিতীয় বিচারক রাজীব সাহা বুধবার রায় ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম— একজন প্রাক্তন শিক্ষক ও তৃণমূল নেতা, যিনি আগে সিপিএম করতেন, পরবর্তীতে যোগ দেন শাসকদলে। অভিযোগ, ২০২১ সালের ৫ জুন বিকেলে মানিকচকের বাড়ির সামনের রাস্তায় খেলা করছিল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীটি। সেই সময় ফুঁসলিয়ে তাকে ফাঁকা ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন রফিকুল (Maldah) । নাবালিকার পরিবার বিজেপি-সমর্থক হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই এই পাশবিক হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার পরেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে এবং তিনি এখনও জেল হেফাজতেই রয়েছেন। পরে এই মামলাটি হাইকোর্টের নির্দেশে চলে যায় সিবিআইয়ের হাতে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি দলও ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে। সিবিআইয়ের আইনজীবী অমিতাভ মৈত্র জানিয়েছেন, ২২ জন সাক্ষীর জবানবন্দির ভিত্তিতে বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন এবং আগামী শুক্রবার তাঁর সাজা ঘোষণা হবে। তাঁরা সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করবেন বলে জানানো হয়েছে।
নির্যাতিতার মা আদালত প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমার মেয়ে শুধু খেলা করছিল, আর আমাদের বিজেপি করার শাস্তি দেওয়া হল! এই মানুষটা আমার মেয়ের শৈশবটা ছিঁড়ে ছুঁড়ে দিল।”
জানা গিয়েছে, বর্তমানে নির্যাতিতা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। তবে সেই বিভীষিকার স্মৃতি আজও তাকে তাড়া করে।
ঘটনার পর থেকেই এই মামলা ঘিরে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদলের রং থাকলেই ন্যায়বিচার আটকে যায়— আর এই রায় সেই ব্যবস্থার মুখোশ খুলে দিয়েছে।